গত শতাব্দীর
’৮০-র দশক থেকে শুরু হওয়া গার্মেন্ট শিল্পের রাতারাতি এতটাই বিকাশ হয় যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, গাজীপুরসহ দেশের
আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো গার্মেন্ট শিল্প গড়ে উঠেছে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’এর সূত্র মতে তাদের তালিকাভুক্ত গার্মেন্টসের সংখ্যাই প্রায় ১০ হাজার’ এরও
বেশি। তাতে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ। ছোট-বড় মিলিয়ে আরো অনেক বেশি গার্মেন্টস কারখানা
রয়েছে। এই শ্রমিকদের শতকরা ৮৫ জনই হচ্ছেন নারী শ্রমিক । সাম্রাজ্যবাদের সস্তা শ্রম লুণ্ঠন এবং মালিকদের অতি মুনাফা অর্জনের
যাঁতাকলে শ্রমিকরা পিষ্ট হচ্ছেন। রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের শতকরা ৭৬ ভাগ আসে
এই গার্মেন্টস শিল্প থেকে। কিন্তু শ্রমিকদের জীবন চলে নির্মম দুর্বিসহ অবস্থায়। সাম্রাজ্যবাদী
বিশ্ব ব্যবস্থায় শ্রমিকদের দৈন্যদশা পৃথিবীর দেশে দেশে থাকলেও বাংলাদেশের
শ্রমিকদের, বিশেষতঃ
গার্মেন্টস শিল্প শ্রমিকরা প্রায় মধ্যযুগীয় দাস প্রথার মধ্যেই রয়ে গেছেন।
বুর্জোয়াদের দ্বারা স্বীকৃত আইনও গার্মেন্টস মালিকরা মানছে না। বুর্জোয়া আইনের
সুবিধাগুলো থেকেও গার্মেন্টস শ্রমিকরা বঞ্চিত। তারা বেতন-ভাতা
ঠিকমত পাচ্ছেন না। ২৪ নভেম্বর, ’১২-এ আগুনে পুড়ে নিহত-আহত
তাজরীন গার্মেন্টের শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন-ওভার টাইম বকেয়া ছিল, দিব, দিচ্ছি বলে টালবাহানা করছিল। ২৪ নভেম্বরের পর
টানা ১০ দিন আন্দোলন-সংগ্রামের পর বিজিএমইএ শ্রমিকের বেতন-ভাতা দিয়েছে। ২৪ এপ্রিল ২০১৩
সালে রানা প্লাজায় ১১৩৮ জন শ্রমিক ভবন ধ্বসে নিহত হয় এবং ২৪৩৮ জন শ্রমিক গুরুত্বর ভাবে
আহত হয় ।
২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর আশুলিয়ার নরসিংহপুর অবস্থিত
হামিম গার্মেন্টে আগুনে পুড়ে ৩৩ জন শ্রমিক নিহত হয়, তাদের পরিবার গুল ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরন পেয়েছে
। ২০০৫
সালে আশুলিয়ার পলাশবাড়ীতে অবস্থিত স্পেক্টাম গার্মেন্টে ভবন ধ্বসে ৬৩ জন শ্রমিক নিহত
হয় এবং অনেক শ্রমিক আহত হয়, নিহত শ্রমিকের
পরিবার মাত্র ৬০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরন পেলেও আহত শ্রমিকরা কোন ক্ষতিপূরন পায়নাই
। আরো
অনেক গার্মেন্টস কারখানাতে হাজার হাজার শ্রমিক নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার শ্রমিক আহত
হয়ে পঙ্গুত জীবন যাপন করছে। নিহত-আহত শ্রমিকদের বেশির ভাগ নারী শ্রমিক । এসব কারখানায় অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের পর বিজিএমইএ শ্রমিকের সুধু মাত্র বকেয়া
বেতন-ভাতা দিয়েছে। বর্তমানে
অনেক কারখানায় এই শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটি,
মেডিক্যাল ছুটি দেয়া হয় না। অসুস্থতাজনিত বা অন্য কোন অনিবার্য
কারণে একদিন হাজির না থাকলেও বেতন কেটে নেয় এবং হাজির না থাকার কারণে বেতন আটকে
রাখে, অনেক ক্ষেত্রে চাকুরী হারাতে হয় । অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয় না। অনেক কারখানায়
নিয়গ পত্র, পরিচয়
পত্র দেওয়া হয়না । বিশেষ কোনো কারণে কোনো
শ্রমিক পরপর কয়েকদিন হাজির না থাকলে ছাঁটাই করে অথবা নতুন করে নিয়োগ দেয়, যাতে পুরনো শ্রমিকের সুবিধা (ঈদ বোনাস ইত্যাদি)
ভোগ করতে না পারে। রাত ৮/১০/১২টা পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য হলেও খাতায় হাজিরা তোলে
সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এটা করে বিদেশী বায়ারদের চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য। বাস্তবে
বিদেশী বায়াররাও যে এই ফাঁকিবাজী জানে না বা বোঝে না তা নয়। দেশী বিদেশী মিলেই
তারা এভাবে আইন ‘মেনে’ চলে। মালিকদের ইচ্ছা-খুশিমত ছাঁটাই
করে, ছাঁটাই করার সময় পাওনা বেতন-ভাতা দেয়া হয় না। নারী
শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হয় না অধিকাংশ গার্মেন্টসে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম
করে আদায় করতে হয়। অনেক কারখনাতে প্রসবকালীন তাদের চাকরী হারাতে হয়। আবার অধিকাংশ
কারখানায় সন্তান প্রতিপালনের জন্য কোনো ডে-কেয়ার সেন্টার নেই, যেখানে আছে সেখানে প্রয়োজনীয় এর তুলনায় অনেক কম বাচ্চা রাখা হয়, আবার এক বছরের নিচের বাচ্চাদের রাখা হয়না, যার
কারণে নারী শ্রমিকরা বাচ্চা লালন পালনের জন্য চাকুরী ছাড়তে বাধ্য হয়।
৮ ঘণ্টা
শ্রম দিবসের স্বীকৃতি থাকলেও গার্মেন্টস শ্রমিকদের শ্রম দিতে হয় দৈনিক ১২/১৪/১৬
ঘণ্টা। এ ছাড়া হোল নাইটও করতে হয় বাধ্যতামূলক। ওভার টাইম মজুরী দ্বিগুণ করার আইন
থাকলেও তা অনেক কারখানায় দেওয়া দেয়া হয় না, ওভার টাইমের ঘন্টা মাস শেষে কেটে নেওয়া হয়।
মালিকরা
শ্রমিক শোষণ করে টাকার পাহাড় গড়লেও গার্মেন্টসে শ্রমিকদের জন্য কোনো সুব্যবস্থা
নেই। ভাত খাওয়ার ভাল কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক গার্মেন্টসে ছাদে বা সিঁড়িতে বসে
খেতে হয়। ডিউটি শেষে নারী শ্রমিকদের অসম্মানজনকভাবে চেক করা হয়। শ্রমিকদের
কারখানার প্রত্যেক তলায় অনেক কারখানায় কলাপসিবল গেটে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। ছোট ছোট
অনেক কারখানায় জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকার কারণে অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা
রাতেই ঘটে থাকে। রাতে আগুন লাগা, গেট বন্ধ থাকা, অপ্রশস্থ সিঁড়ি, খরচ বাঁচানোর জন্য দুর্বল বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে, অর্থাৎ অব্যবস্থাপনার কারণেই প্রায় ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং
বহু শ্রমিক আগুনে পুড়ে আহত-নিহত হন। মনে হয় যেন, মালিক এবং
সরকারের এর জন্য কোনো দায় নেই। ভবন ধ্বসে, আগুনে পুড়ে হাজার
হাজার শ্রমিকের মৃত্যু হলেও এ পর্যন্ত কোনো মালিকের শাস্তি পেতে হয়নি।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আর্ন্তজাতিক বাজারে বাংলাদেশে
গার্মেন্টস্ শিল্পের যে নেগেটিভ ইম্প্রেসনস্ হয়েছিল তা এখন অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
এই ঘটনা হবার কারনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস্ শিল্প অনেক চেঞ্জ হয়েছে । এটি ছিল
গার্মেন্টস্ সেক্টরের একটি টার্নিং পয়েন্ট । গার্মেন্টস্ ম্যানুফেকচারারর্স
থেকে শুরু করে গার্মেন্টস্ মালিকরা এখন অনেক সতর্কতা পালন করছেন । বায়ারদের কনফিডেন্টস্ এখন অনেক বেড়ে গেছে । বিশেষ করে কোম্পানিগুলোতে
একর্ড-এলাইন্স এর আওতাভূক্ত থাকার কারণে এবং কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
অধিদপ্তর কিছুটা একটিভ থাকার কারণে শ্রমিকদের কিছুটা নিরাপত্তা বেড়েছে ।
চার দশকে দেশের পোশাক শিল্পের উন্নতি অন্য রকম। ৪০ হাজার ডলারের
রফতানি আয় পৌঁছেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলারে। স্ফীত হয়েছে মালিকদের সম্পদ। এর সবটাই
সম্ভব করেছে সস্তা শ্রম। এ শিল্পের ভরসার জায়গাও এখনো নিম্ন মজুরিই। কয়েক দফা বেড়ে
৫ হাজার ৩০০ (৬৬ দশমিক ৮৮ ডলার) টাকায় পৌঁছেছে শ্রমিকদের নিম্নতম মাসিক মজুরি।
তারপরও তা এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মজুরির তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, কম্বোডিয়ায় ন্যূনতম
মাসিক মজুরি ১৪০ ডলার। ভিয়েতনামে এ মজুরি প্রায় ১৪৭ ডলার, ফিলিপাইনে
২০২, ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ১৬০, মালয়েশিয়ায়
২২৩, থাইল্যান্ডে ২৬৫, চীনে ২৩৪ ও
মিয়ানমারে ৮০ ডলার। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতে নিম্নতম মাসিক মজুরি
প্রায় ১৪৪ ডলার, পাকিস্তানে ১০৬, শ্রীলংকায়
প্রায় ৬৯, নেপালে ৭৪ ও আফগানিস্তানে ৭৩ ডলার।
তবে জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় বাংলাদেশের বিদ্যমান এ মজুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ
না। দেশের সবচেয়ে বড় শিল্প খাত পোশাক শিল্পে ১৯৮৫ সালে নিম্নতম মজুরি ছিল ৫৪২
টাকা। ১৯৯৪ সালে এটি বাড়িয়ে ৯৩০ টাকা করা হয়। এর এক যুগ পর ২০০৬ সালে মজুরি বাড়িয়ে
করা হয় ১ হাজার ৬৬২ টাকা। এর পর ২০১০ সালে নিম্নতম মজুরি বেড়ে হয় ৩ হাজার টাকা।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে নিম্নতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে মজুরি কমিশন। তবে
মজুরি বৃদ্ধির জন্য প্রতিবারই আন্দোলন করতে হয়েছে শ্রমিকদের। অনেকটা নিয়ম মেনেই
মজুরি বৃদ্ধিতে অনীহা দেখিয়েছেন শিল্প মালিকরা।
পোশাক শিল্পে কর্মরতদের মধ্যে একটি বড় অংশ নিম্নহারে মজুরি পায় না। এ
খাতের ৮০ শতাংশ নারী শ্রমিকের মজুরি ৫ হাজার ৩০০ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে ৭০ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক ৫-৭ হাজার টাকা মজুরি পান। নারী পুরুষের মজুরী
বৈষম্য দুর হয়নি।
সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপের তথ্যানুযায়ী, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মিলিয়ে
শ্রমশক্তি দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশের উৎপাদন, নির্মাণ, কৃষি ও মত্স্য খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম গড়
মজুরি ৮ হাজার ৮৪৬ টাকা।
দেশের খাতভিত্তিক ন্যূনতম মজুরি মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিপুল
জনগোষ্ঠী আমাদের দেশের জন্য সম্পদ। তবে এখানে বৈষম্যপূর্ণ মজুরি কাঠামো বিদ্যমান।
বৈষম্যমূলক এ মজুরি কাঠামোর ফলে প্রত্যক্ষভাবে না হলেও শ্রমের ক্ষেত্রে এক ধরনের
এক্সপ্লয়টেশন রয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। তবে সদিচ্ছার অভাবে সেটি হচ্ছে না।
জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক
(ইউএন-এসকাপ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়
দেশগুলোর মধ্যে শ্রম উৎপাদনশীলতায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্থানে। বাংলাদেশে
শ্রমের গড় উৎপাদনশীলতা বছরে মাত্র ৮ হাজার ডলার। এর চেয়ে কম শ্রমের গড় উৎপাদনশীলতা
রয়েছে শুধু কম্বোডিয়ায়। দেশটির শ্রমিকদের গড় উৎপাদনশীলতা ৬ হাজার ডলার। দক্ষিণ
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলংকা ১৪তম, পাকিস্তান ২০ ও ভারত
২২তম স্থানে রয়েছে। দেশ তিনটির শ্রমের গড় উৎপাদনশীলতা যথাক্রমে ২৩ হাজার, ১৮ হাজার ও ১৫ হাজার ডলার।
সংস্থাটি তথ্য বলছে, শ্রমের মজুরির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের
চেয়ে অনেক পিছিয়ে। নিম্ন উৎপাদনশীলতার এটি অন্যতম কারণ। এজন্য বিভিন্ন খাতে মজুরি
বাড়ানোর প্রতি নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। কারণ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহূত
উপকরণ তথা শ্রমের দক্ষ ব্যবহারের ওপর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে। কারণ শ্রমের
উৎপাদনশীলতা বেশি হলে অধিক বিনিয়োগ ও অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এছাড়া
ব্যবহূত উপকরণগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি করা গেলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বাড়ে,
যা জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
শিল্প মালিকরা সস্তা শ্রমকে শক্তির বদলে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ
কারণে বর্তমান বিশ্ববাজারে প্রতিযোগী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধি
অত্যন্ত জরুরি হলেও এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেই। পাশাপাশি শ্রমিক ও তার
পরিবারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতেও খুব অল্প সংখ্যক শিল্প মালিকই এগিয়ে এসেছেন।
অথচ শ্রমিকদের দুপুরের খাবার, চিকিৎসা, ডে-কেয়ার সেন্টারসহ
বিভিন্ন সেবা ও প্রণোদনা নিশ্চিত করা গুটিকয় প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালে দেখা যায়,
সেখানে মালিকদের মুনাফা কমেনি। বরং অসন্তোষ কম থাকায় পোষাক উৎপাদন
নির্বিঘ্ন হচ্ছে না।
বছরে বছরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলেও গার্মেন্টস
শ্রমিকদের মজুরী বহু আন্দোলন ছাড়া কখনই বাড়ে না। আন্দোলনের চাপে গত তিন দশকে কয়েক
দফা মজুরী বেড়ে নিুতম মজুরী এখন দাঁড়িয়েছে বেসিক ৩ হাজার টাকায়। প্রত্যেকবারই
শ্রমিকরা আন্দোলন করে বুকের রক্ত ঢেলে মজুরী বৃদ্ধি করতে মালিকদেরকে বাধ্য করেছে।
২০১৩ সালে যে মজুরী কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে সেই নিুতম মজুরীও অনেক কারখানায়
ঠিকমত দিচ্ছে না মালিকরা। শিক্ষানবিশ হিসেবে ৩-৬ মাস পর্যন্ত ৪২০০ টাকা করে মজুরী
দেয়া হয়। যেসব শ্রমিক পুরনো মজুরী কাঠামোতে তৃতীয় গ্রেডে বেতন পেতেন তাদেরকে ৪র্থ
বা ৫ম গ্রেডে বেতন দেয়া হচ্ছে। ওভার টাইমের ভাতা কমিয়ে দিচ্ছে। নাইট বিল কমিয়ে
কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বলছে যত সময় লাগুক কাজ করতে হবে, টার্গেট
পূরণ করতে হবে। এর জন্য মালিক অতিরিক্ত মজুরী দিচ্ছে না। নতুন মজুরী কাঠামো
বাস্তবায়নের নামে শ্রমিকদের উপর শোষণ-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে, তিন জন শ্রমিকের কাজ দুই জনকে শ্রমিককে দিয়ে করানো হচ্ছে। অনেক কারখানায়
হাজিরা বোনাস, বিশেষ ভাতা, পারদর্শী
ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিত। বর্তমানে সেগুলো কমিয়ে দেয়া হয়েছে, বেশির ভাগ কারখানায় সেই সব সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইপিজেড সহ সকল
শ্রমিকদের সর্বশেষ বেতন বাড়ানোর ছয় মাসের ব্যবধানেই শ্রমিকদের বেতন কমেছে কারণ
মজুরী বৃদ্ধির পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাস্তবে
মজুরী পূর্বের চেয়েও কমে গেছে। গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকদের বাসস্থানের কোন
ব্যবস্থা না করায় বাড়ী-মালিকরা দফায় দফায় বাসা-ভাড়া বাড়িয়ে শ্রমিকদের বর্ধিত
মজুরীর বড় অংশই আত্মসাৎ করে নিয়েছে। এভাবে মজুরী বৃদ্ধি শ্রমিকদের কোন কাজেই
লাগেনি। অন্যদিকে বিবিধভাবেই নিুতম মজুরী বেসিক ৩ হাজার টাকা করা হলেও শ্রমিকরা
অনেকেই পাচ্ছেন তারও কম। এভাবে মালিক সমিতি বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয় এক
প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এসব অভিযোগ শ্রমিক নেতারা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং
শ্রম মন্ত্রণালয়ে জানালেও এর প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা সরকারপক্ষ নেয়নি।
২০১৩-এর নভেম্বর-এ যে মজুরী কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে তা
বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে কম। প্রতিবেশী দেশ ভারতের মজুরী প্রতি ঘণ্টায় ৫৫ থেকে
৬৮ সেন্ট। অর্থাৎ বাংলাদেশের ৩৯ টাকা থেকে ৪৮ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশের পোশাক শিল্প
শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরী প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ১৪ টাকা ৪২ পয়সা। অথচ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে
বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। চলতি ২০১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে
(জুলাই-মে) বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করে দুই হাজার ৮১৩ কোটি (২৮.১৩ বিলিয়ন)
ডলার আয় হয়েছে। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। আর
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। মূলত তৈরি পোশাকের ওপর ভর করেই রপ্তানি
আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। অর্থবছর শেষে এই খাতের রপ্তানি ৩০
বিলিয়ন (৩ হাজার কোটি) ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরা।
জানা যায়,
বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়।
প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশ দুটির রপ্তানি ব্যবধান ১১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন গতি আসায়
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী ।
আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি আয় আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। তবে টাকার বিপরীতে
ডলারের দরবৃদ্ধি রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অবদান রাখছে বলে মনে করছেন
বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা । বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি। ছয় মাসে
বেড়েছে ৩ শতাংশ। অর্থবছরের শেষ মাসেও (জুন) রপ্তানি আয় বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত
থাকবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা ।
শিপ্ল মালিকরা কনে করেন, কারখানাগুলোর উন্নয়নে মালিকরা অনেক
টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কষ্টও করেছেন। ৮০ শতাংশের বেশি কারখানা উন্নত কর্মপরিবেশের
(কমপ্লায়েন্স) আওতায় চলে এসেছে। এতে বায়াররাও খুশি। যার ইতিবাচক ফল শিল্প মালিকরা
পাচ্ছে । সামগ্রিক রপ্তানিতে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০
শতাংশ। এবার পোশাক রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে
যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করায় পোশাকের অর্ডার দিচ্ছেন ভায়াররা । গত বছরের
সেপ্টেম্বর মাসে বড় ধসের পর অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল প্রতি মাসেই বেড়েছে রপ্তানি আয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে
দেখা যায়, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই মে)
বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ তিন হাজার ৩৭৩ কোটি (৩৩.৭৩ বিলিয়ন) ডলার
আয় করেছে। এই অঙ্ক গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।
তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। এই ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল তিন
হাজার ৩৮৭ কোটি ৭০ লাখ (৩৩.৮৭ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে
তিন হাজার ১৬২ কোটি ২৮ লাখ (৩১.৬২ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে দুই হাজার
৮১৩ কোটি (২৮.১৩ বিলিয়ন) ডলারের যে আয় হয়েছে তার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক
থেকে। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার এবং উভেন
পোশাক রপ্তানিতে এক হাজার ৪১৯ কোটি ডলার আয় হয়েছে। এই ১১ মাসে নিট খাতে রপ্তানি
বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর উভেনে বেড়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এতে দেখা
যায় বাংলাদেশী মালিকরা অনেক বেশি মুনাফা করলেও শ্রমিকদের সবচেয়ে কম মজুরী দেয়। আর
এ কারণেই শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
২০১৩ সালে
নতুন মজুরী কাঠামোর পর সরকার দফায় দফায় গ্যাস,
বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করায় নিত্য পণ্যের মূল্য,
বাড়ি ভাড়া, পরিবহন ভাড়া গত পাঁচ বছরে তিন গুণ
বেড়েছে। যার পরিসংখ্যান এখানে দেয়ার প্রয়োজন নেই। শ্রমিক ও জনতা প্রত্যক্ষ জীবন
থেকেই বুঝতে পারছেন। বস্তিতে ছোট এক রুমের ভাড়া ৪ হাজার টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না
ঢাকা শহরে। তা-ও ৫/৭টা পরিবার মিলে এক বাথরুম, ১/২টা টয়লেট
ব্যবহার করতে হয়। রাত ৯/১০টায় ঘরে ফিরে রান্না করে খেয়ে রাত ১২টার আগে ঘুমাতে
যাওয়ার উপায় নেই। আবার ভোর ৪টা থেকে লাইন ধরে গোসল, রান্না,
খাওয়া সেরে সকাল ৮টার আগে কারখানায় পৌঁছাতে হয়। ১মিনিট লেট হলেই
হাজিরা বোনাস কেটে নেয়া হয়, গেইটে দাড়করিয়ে খারাপ ব্যবহার
করা হয়। এরকম ঘর ভাড়া দিতেই ৪ হাজার টাকা চলে যায়। ওভার টাইমের টাকা দিয়ে সারা
মাসের খাওয়া, চিকিৎসা, কাপড় ইত্যাদি
খরচ চালাতে হয়। উপরন্তু মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানতো রয়েছেই। উপায়ান্তর না পেয়ে শ্রমিকরা একরুমে ৪/৫ জন
গাদাগাদি করে আলো-বাতাসহীন দুর্গন্ধযুক্ত ঘরে বাস করেন। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে
অন্যদের দায়িত্ব পালন করেন। এই কারণেই শ্রমিকরা ওভার টাইম করতে চান। তারা ন্যয্য
মজুরী পেলে এই অমানুষিক পরিশ্রম তারা করতেন না। শ্রমিকদের অনাবিল দাম্পত্য জীবন,
বিনোদন বলতে কিছু নেই। ভাড়া বাড়িতেও শ্রমিকদের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
সন্তান-ভাই-বোনদের নিয়ে বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না বাড়িওয়ালারা। তারা তথাকথিত
নিরিবিলির জন্য ছোট পরিবার ভাড়া দিয়ে থাকেন। আগামীতে বাড়ি ভাড়া, দ্রব্যমূল্য আরো বাড়বে, কারণ বর্তমান সরকার আবারো
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। বিদ্যুতের মূল্য বাড়ছে। তাই, গার্মেন্টস শ্রমিকদের বর্তমান মজুরীতে কোনো মতেই চলছে না। মজুরী বৃদ্ধির
আন্দোলনে ফের শ্রমিকদের নামতে হবে। কারণ মালিকরা আন্দোলন ছাড়া বেতন বৃদ্ধি করবে
না। কারণ নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন হলেও তার কার্ষক্রম নেই । কিন্তু শ্রমিক আন্দোলন
হলে বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে সরকার-মালিক মিলে কোরাসে গাইতে থাকে এটি উসকানি, নাশকতা, আন্তর্জাতিক
ষড়যন্ত্র বলে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থায় পুঁজিপতিরা বা
সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী দেশগুলো বাজার দখলের জন্য নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি এবং
ষড়যন্ত্র করে থাকে। কথা হচ্ছে এই ষড়যন্ত্রকারী দেশ ও ব্যক্তিদের নাম সরকার কখনই
প্রকাশ করে না। এবারও তাজরীন ও রানাপ্লাজায় শ্রমিক হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী সংসদে
দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হাজির করেছে। আর এর বলি করা হয়েছে শ্রমিকদেরই। শ্রমিকদের
গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে, রিমাণ্ডে পাঠিয়েছে। রাজনৈতিক ফায়দা
লুটার জন্য কোনো তদন্ত ছাড়াই প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামাতকে দায়ী করেছে।
মালিকদের রক্ষার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হাজির করা হয়। মালিকদের
জানমাল রক্ষা এবং শ্রমিক বিক্ষোভকে দমনের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী পাঠিয়েছে। অথচ জীবিত শ্রমিকদের
বেতন দিতে, তাদের ছাঁটাই বন্ধ করতে, তাদের
চাকরীর নিশ্চয়তার কোনো ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী করেনি। শ্রমিকদের প্রতিটি ন্যায্য
আন্দোলন দমনে প্রত্যেক সরকারই এ ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বুর্জোয়া আইনে
শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার বিধান থাকলেও মালিকরা সে অধিকার দিচ্ছে না। ইউনিয়ন
করতে গেলে বা কোনো ইউনিয়নের সাথে যুক্ত আছে জানতে পারলে মামলা-হামলা নির্যাতন করে
সেই শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিকদের উপর মালিকদের এই মধ্যযুগীয় শোষণ-নিপীড়নের
বিরুদ্ধে কোনো সরকারই কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, নিচ্ছে না।
উপরন্তু বর্তমান সরকার শ্রমিক দমনে ইণ্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করেছে।
আজকে
শ্রমিকদের এই সত্য উপলব্ধি করতে হবে যে,
বুর্জোয়া শ্রম আইন, বুর্জোয়া আদালত, সরকার, এদের রাষ্ট্রব্যবস্থা মধ্যযুগীয় এই দাসত্ব
থেকে তাদের মুক্তি দেবে না। প্রতিবার মজুরী বৃদ্ধি রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমেই
করতে হয়েছে, কিন্তু তাতে সমস্যার কোনো সমাধানই হচ্ছে না। তাই,
শ্রমিক শ্রেণীকে সাম্রাজ্যবাদ, দালাল শাসক শ্রেণী
তথা মালিক শ্রেণীর শোষণ-নির্যাতন-লাঞ্ছনার ব্যবস্থা থেকে মুক্তির জন্য লড়তে হবে।
লড়তে হবে নিজেদের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা নেবার জন্য। এবং প্রতিষ্ঠা করতে হবে পুঁজিবাদের
বদলে সমাজতন্ত্র। বুর্জোয়া আইন, বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা
উচ্ছেদের এবং শ্রমিক শ্রেণীর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের বিপ্লবী রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরতে
হবে। আশু দাবি-দাওয়ার আন্দোলন যা নাকি বিপ্লবী রাজনীতিকে সহায়তা করে এমন ধারার
ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলতে হবে। যে ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক শ্রেণীর প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব
করবে। যার নেতারা টাকার বিনিময়ে মালিকদের, সরকার তথা শাসক
শ্রেণীর কাছে বিক্রি হবে না। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো তুলে ধরে লাগাতার সংগ্রাম
চালাবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত। কেবল বিপ্লবী ধারার রাজনীতি, এবং তার সমর্থনে বিপ্লবী ধারার ট্রেড ইউনিয়নই শ্রমিক শ্রেণীকে মুক্তির
দিকে এগিয়ে নিতে পারে।
লেখকঃ খাইরুল
মামুন মিন্টু
সাংগঠিক
সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন
কেন্দ্র