Biplobi Barta

মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মূল মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মোট মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা প্রত্যাহার করে, রাষ্ট্রীয় খাতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ন্যূনতম মূল মজুরির নির্ধারনের জানাছি।


১৪ জানুয়ারি’২০১৮, গার্মেন্ট শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন হওয়ার পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর’২০১৮, বৃহস্পতিবার তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মোট মজুরি হবে ৮ হাজার টাকা৷ এর মধ্যে মূল বেতন ৪ হাজার ১০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ২০৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা, খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা।
এর আগে দেশে এ খাতের শ্রমিকদের জন্য ১৯৮৪ সালে প্রথম মজুরি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল ৬৩০ টাকা। পরে ১৯৯৪ সালে ৯৩০ টাকা, ২০০৬ সালে এক হাজার ৬৬২ টাকা এবং ২০১০ সালে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয় তিন হাজার টাকা।
তবে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর সর্বশেষ ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছিল। এর মধ্যে মূল বেতন হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া ১২০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ২৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ২০০ টাকা, খাদ্য ভাতা ৬৫০ টাকা৫ শতাংশ হারে বাৎসরিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ৫ বছর পরে বিদ্যমান মূল মজুরি ৩৮২৮ টাকা, অর্থাৎ শ্রমিকদের মূল মজুরি মাত্র ২৭২ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, সরকার মালিকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে প্রহসনমূলক মজুরি ঘোষণা করেছে। তারপরেও ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে সপ্তম গ্রেড (গার্মেন্ট শিল্পে ৫% শ্রমিক) হেলপারদের। এটা সর্বনিম্ন। শিক্ষানবিশ গ্রেড। পরবর্তী গ্রেডগুলোর বেতন কী হবে, তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। গার্মেন্ট শিল্পে ৯৫% শ্রমিকদের পরবর্তী গ্রেডগুলোতে বেতন কী হবে তা নির্ধারন না করাতে পরবর্তী গ্রেডগুলোতে আরো বড় ফাঁকি দিবে বলে মনে হচ্ছে।
ট্যানারিশ্রমিকদের মাসিক ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৮০০ টাকা। এ ছাড়া জাহাজভাঙা শিল্পে ১৬ হাজার এবং ওষুধশিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ৫০ টাকা। চলতি মাসেই রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানার শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকা ঘোষণা করেছে সরকার। মজুরির সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা যোগ করলে মাস শেষে বেতন-ভাতা ১৪ হাজার টাকার বেশি। কিন্ত এই মজুরি কার্যকর হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে, ফলে ৮৩০০ টাকার বেসিকের সাথে ৫% ইনক্রিমেন্ট যোগ হবে। এর সাথে অন্যান্য ভাতাদি যুক্ত হয়ে এখন সর্বনিম্ন পাচ্ছে ১৭,৮১১ টাকা।
ট্যানারি, জাহাজভাঙা ও ওষুধশিল্পের চেয়ে অনেক বড় এবং ব্যবসাসফল খাত হচ্ছে তৈরি পোশাক। দেশের পণ্য রপ্তানির সাড়ে ৮৩ শতাংশ পোশাক খাত থেকে আসছে। তবে ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার বা আড়াই লাখ কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের এই খাতের শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরি উল্লেখযোগ্য অন্য খাতের তুলনায় বেশ কম।
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন৷ মজুরি বোর্ড বলেছে, এবার মোটের ওপর ৫১ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়েছে৷ দুই বছর আগে থেকে চার সদস্যের একটি পরিবারের হিসাব করে ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকার দাবি জানিয়ে আসছিল গার্মেন্ট শ্রমিকরা ৷ আর দুই বছরে জিনিসপত্রের দাম আরো বেড়েছে৷ অন্যান্য খরচও বেড়েছে৷ স্বামী-স্ত্রী দুই জনের এক পরিবারের জন্য এই আট হাজার টাকা দিয়ে একটা ঘর ভাড়া দিতেই চলে যাবে, খাওয়া, পোষাক, চিকিৎসা, যাতায়াত কোন চাহিদাই পূরণ করতে পারবেনা।
অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য মোট রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে মোট পণ্য রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৪ শতাংশের বেশি। এই সময়ে ২৯১ কোটি ২৮ লাখ ডলারের নিট ও ২৮২ কোটি ২২ লাখ ডলারের ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে নিট পোশাকে দেড় শতাংশ এবং ওভেন পোশাকে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
গত ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আশুলিয়া অঞ্চলের প্রায় ১০০ টিরও বেশি কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করতে গিয়ে হাজার হাজার গার্মেন্ট শ্রমিক ছাটায়-নির্যাতন মামলা-হামলার শিকার হয়েছিল। দেশী-বিদেশীদের চাপে সরকার গত ১৪ জানুয়ারি’২০১৮ গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন করে।
এত কম মজুরী নির্ধারন করা হইলেও গার্মেন্ট মালিকরা বলছেন ‘‘এবার মজুরি বেশি বাড়ানো হয়েছে। প্রথমবার ১৩শ' ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম মজুরি করেছিলাম ৩ হাজার টাকা৷ এরপর ২২শ' বাড়িয়ে করেছিলাম  ৫ হাজার ৩শ'। আর এবার ২৭শ' টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা৷ গত কয়েক বছর ধরে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি নেই৷ রপ্তানি বাড়ছে না। বেতন বাড়ালেই তো হবে না, বেতন তো দিতে হবে৷এই ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা মজুরি একদম শিক্ষানবিশ পর্যায়ে। তারা আমার মেশিন নষ্ট করে কাজ শিখবে। বাংলাদেশে একজন মাষ্টার্স পাশ তরুণও প্রথমে ১২ হাজার টাকার বেশি বেতনের চাকরি পায় না। বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে৷যারা এই ন্যূনতম মজুরি মানে না, তারা দেশের কল্যাণ চায় না। তারা হততালি নিয়ে, বাহবা নিয়ে নেতা হতে চায়। কিছু বাম নেতা এটা মানে না। ন্যূনতম মজুরির সাথে সমন্বয় রেখে অন্যান্য গ্রেডের বেতনও বাড়ানো হবে। এটা নিয়ে নতুন করে দাবি করার কিছু নেই।
১৯৯৩ সালের পর ২০০৬/ ২০১০/২০১৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকরা যখন তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবী জানিয়ে ছিল তখনও গার্মেন্টস মালিকেরা বলেছিলেন অতিরিক্ত মজুরি বৃদ্ধি করা হলে বেশির ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ আমরা কি দেখছি ২০০৬/ ২০১০/২০১৩ সালে তিন দফায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে কিন্তু কোনো গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়েছে তা আমি শুনিনি। বরং দিনে দিনে গার্মেন্টস কারখানা গুলো আরো বিকশিত হয়েছে। ছোট ছোট গার্মেন্টস কারখানার মালিকেরা আজ বড় বড় গার্মেন্টস কারখানার মালিক হয়েছেন। প্রথম আলো প্রত্রিকাতে প্রকাশিত এক্সপোর্টাস এসোশিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর জমা দেওয়া মনোনয়ন পত্রের হলফনামায় আয়ের উৎস সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে তাঁর নিজের আয় ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা, তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে বছরে নিজের আয় ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের আয় ১৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে নিজের আয় ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের আয় ৪৭ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজের নামে নগদ সাড়ে ১৩ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৪ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ১ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা রয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ১২ লাখ টাকা ও নির্ভরশীলদের নামে ১৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ার রয়েছে নিজের নামে ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তাঁর গাড়ির মূল্য মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকা। স্বর্ণ আছে নিজের সাড়ে ৯ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার। আসবাবপত্রের মূল্য ৩০ হাজার টাকা। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ আছে নিজের নামে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে থাকা ভবনের মূল্য ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে থাকা ভবনের মূল্য ৩৪ লাখ টাকা। আর ব্যাংকে তাঁর যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে তার পরিমাণ ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অথচ একজন শ্রমিক যে নিজের শরীরের সবটুকু শ্রম এই গার্মেন্ট মালিকদের কাছে বিলিয়ে দিলেও তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য যে মজুরী পাওয়ার কথা তা তারা পাচ্ছেনা।
তাই পরি শেষে বলতে চায়, ঘোষিত মজুরী পুনঃ বিবেচনা করে, রাষ্ট্রীয় খাতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ন্যূনতম মূল মজুরির নির্ধারনের জানাছি।
লেখকঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠিক সম্পাদক,গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

শ্রমিক ও শিল্পের সার্থেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী ১৬,০০০ টাকা করতে হবে


বিজিএমইএ এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গার্মেন্টস শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ৬৩৬০ টাকা নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ন্যূনতম মজুরি এর বেশি হলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ৭সেপ্টেম্বর’২০১৮, রবিবার রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক জরুরি সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বাহির থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন মজুরি বাড়ানোর জন্য শ্রমিকদের দিয়ে অযথা আন্দোলন করাচ্ছে। কিন্তু এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তারা জানে না যে অতিরিক্ত মজুরি বৃদ্ধি করা হলে বেশির ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে নতুন করে অনেক বেকারত্ব সৃষ্টি হবে। তাই অযথা আন্দোলন না করে দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করুন। বিকেএমই সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের যারা শ্রমিক আছেন তারা আমাদের পরিবারের সদস্যের মতো। তাই তাদের যতটুকু চাহিদা সেই অনুপাতে মজুরি নির্ধারণ করবো। তিনি বলেন, আমরা যে মালামাল রপ্তানি করছি বিভিন্ন কারণে সেই পণ্যের দাম কমে গেছে। এতে করে গার্মেন্টস শিল্প অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই অযথা বেতন বাড়ানোর আন্দোলন  করবেন না। বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বর্তমানে যে অবস্থায় আছি তা খুব ভয়াবহ। তাই আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা এই বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিবেন না। তাহলে অতিশীঘ্রই এই গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৯৯৩ সালের পর ২০০৬/ ২০১০/২০১৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকরা যখন তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবী জানিয়ে ছিল তখন গার্মেন্টস মালিকেরা বলেছিলেন অতিরিক্ত মজুরি বৃদ্ধি করা হলে বেশির ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ আমরা কি দেখছি ২০০৬/ ২০১০/২০১৩ সালে তিন দফায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে কিন্তু কোনো গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়েছে তা আমি শুনিনি। বরং দিনে দিনে গার্মেন্টস কারখানা গুলো আরো বিকশিত হয়েছে। ছোট ছোট গার্মেন্টস কারখানার মালিকেরা আজ বড় বড় গার্মেন্টস কারখানার মালিক হয়েছেন। এক্সপোর্টাস এসোশিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর মাসিক আয়ের হিসাব অনুযায়ী একজন গার্মেন্টস মালিকদের মাসিক গড় আয় ৪৭ লক্ষ টাকা। আর একজন গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাসিক মজুরী ৬,৩৬০ টাকা দিতে চান গার্মেন্টস মালিকেরা। বিকেএমই সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের যারা শ্রমিক আছেন তারা আমাদের পরিবারের সদস্যের মতো। তাই তাদের যতটুকু চাহিদা সেই অনুপাতে মজুরি নির্ধারণ করবো। আমি সুধু বিকেএমই সভাপতি সেলিম ওসমানের কাছে জানতে চায়, আপনার পরিবারের একজন সদস্য প্রতিদিন কি খায়, কি পোষাক পরে, কোথাই ঘুমায়, কোথায় লেখাপড়া করে, কোথায় চিকিৎসা নেন আপনি আমাদের বলুন। আর একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের পরিবারের সদস্য প্রতিদিন কি খায়, কি পোষাক পরে, কোথাই ঘুমায়, কোথায় লেখাপড়া করে, কোথায় চিকিৎসা নেন আপনি কি খোঁজ খবর রাখেন?। গার্মেন্টস শ্রমিকেরা খাবারের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভোগেন, গভীর রাত্রি পর্যন্ত কাজ করে বাসায় ফিরে ঝুপড়ীর একটা ছোট্র ঘরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাকেন, যেখানে আলো বাতাশ নেই বললেই চলে, চিকিৎসকের ফি জুগাড় না করতে পেরে পাশের ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা। সন্তানদের লেখাপড়া শেখাতে পারেনা। এভাবে যদি চলতে থাকে আর কিছুদিন পরে গার্মেন্টস কারখানাতে কাজ করানোর জন্য কোন শ্রমিক পাওয়া যাবেনা। তাই শ্রমিক ও শিল্পের সার্থেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী ১৬,০০০ টাকা করতে হবে।

লেখকঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র