Biplobi Barta

শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

নিউ টাউন কোম্পানি লিমিটেড গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।


গাজীপুর, কোনাবাড়ী অবস্থিত নিউ টাউন কোম্পানি লিমিটেড গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা গত ১৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ থেকে লাগাতার ভাবে বিভিন্ন কর্মসুচি চালিয়ে আসছে।তার মধ্যে শুকনো চিড়া-মুড়ি খেয়ে গত ৫ ডিসেম্বর বিকেএমইএ এর ঢাকা অফিসের সামনে অবস্থান করেপ্রচন্ড শিত উপেক্ষা করে সবাই গাদাগাদি করে খাওয়া দাওয়া না করেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি অফিসে রাত্রি যাপন করে৬ ডিসেম্বর সকাল ৯ টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছে শ্রমিকেরা৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান চলা কালীন বেলা ১১ টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ক্রাইসিস ম্যানেজম্যান্ট কোর কমিটির মিটিং করে একটি কমিটি করে দিয়েছেন, কমিটি ৭ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন
এই কারখানায় প্রায় ১৮০০ শ্রমিক কাজ করে যার বেশির ভাগী শ্রমিক নারী এই কারখানায় শ্রমিকদের বেশীর ভাগ চাকুরীর বয়স ১০ বছরের বেশি, কারো কারো ২০ বছরের বেশি।শ্রমিকদের সাথে কথা বলে যানা যায়, এই কারখানার মালিক এই কারখানার লাভের টাকায় ভিয়েতনামে একটি কারখানা কিনেছেন। এদিকে এই কারখানার শ্রমিকরা পরিবার পরিবার পরিজন নিয়ে না খেতে পেয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে, বাচ্চাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এক শ্রমিক অর্থের অভাবে আত্যহত্যা করেছেন।এই গার্মেন্ট মালিকের বাংলাদেশ থেকে ভিয়েতনামে টাকা পাচারের সাথে গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জড়িত।শ্রমিকদের ধারণা নিউ টাউন কোম্পানি লিমিটেড গার্মেন্ট কারখানার মালিক গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এর বাড়ীতেই আছেন।শ্রমিকরা যখনই বকেয়া বেতনের দাবী তুলেছে তখনই গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম শ্রমিকদের হুমকি-ধামকি, ভয়ভীতি দেখিয়েছেন শ্রমিকদের এবং বিভিন্ন দালাল শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের মাঝে লেলিয়ে দিয়েছেন, শ্রমিকদের ম্যনেজ করার জন্য।একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ আসা করেনি শ্রমিকরা।শ্রমিকরা ভেবে ছিল গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম শ্রমিকদের পাশে থেকে তাদের পাওনা আদায় করে দিবে কিন্তু তিনিই শ্রমিকদের বলেছেন তার পাওনা ৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা মালিকের কাছ থেকে আদায় করে দিতে।গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের এই আচরণ প্রমান করে যে শ্রমিকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করার যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার সাথে গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জড়িত।
নিউ টাউন কোম্পানি লিমিটেড গার্মেন্ট কারখানায় প্রতি এক মাসে প্রায় ১৮০০ শ্রমিকের বেতন দিতে লাগে দুই কোটি টাকারও বেশি, তিন মাসে শুধু বকেয়া বেতন ৬ কোটি টাকারও বেশি লাগবে।আর যদি কারখানা স্থায়ী ভাবে বন্ধ করতে হয় তাহলে শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনা দিতে আরো প্রায় ২০ কোটি টাকা লাগবেতার মানে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকা লাগবে শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করে কারখানাটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দিতেএই টাকা যাতে শ্রমিকদের না দেওয়া লাগে তার জন্য কারখানার মালিক বিভিন্ন ধরনের টাল বাহানা শুরু করেছে।যার সাথে কারখানার মালিক, গাজীপুরের বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, বিকেএমইএ, সরকারের কিছু লোকজন এবং কিছু দালাল শ্রমিক সংগঠন। মালিক পক্ষ মনে করেছিল সামনে নির্বাচনের ডামাডলে শ্রমিকেরা আন্দোলন করতে পারবেনা তাই শ্রমিকদের যেভাবে বোঝাবে সে ভাবেই বুঝবে, কিছু লাম-সাম পাওনা দিয়ে শ্রমিকদের বিদায় দিবে।কিন্তু শ্রমিকেরা সংগঠিত থাকার কারনে তারা তা পারছেনা।


লিখেছেনঃ খাইরুল মামুন মিন্টু
সাংগঠনিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নিম্নতম মজুরী কিছুতেই শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ হবেনা।



তৈরী পোশাক শিল্পের ঘোষিত নিম্নতম মজুরী শ্রমিকদের কিছুতেই পূরণ চাহিদা হবেনা না।গার্মেন্ট শ্রমিকদের যে কই টাকা বেতন বাড়লেও বাড়ছে বাড়ি ভাড়া, গাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা খরচ ও চাউল, ডাউল, আটা, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম। তাই থমকে যাচ্ছে তাদের জীবন মান। অথচ বাংলাদেশে প্রস্তুতিকৃত পোশাক ইউরোপিয়ান দেশ জার্মানি, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড এবং স্পেনসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের রয়েছে অন্যতম অবস্থান। এছাড়া নন-ট্র্যাডিশনাল মার্কেট হিসেবে রপ্তানি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, জাপানসহ আরো কয়েকটি দেশেও।
 
দেশের ৪ হাজার ৪৮২টি গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছে প্রায় চার মিলিয়ন শ্রমজীবী মানুষ। সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ভোর থেকে গভীর রাতে রাস্তায় এভাবে ছুটে চলা শ্রমিকরা সেই প্রমাণই দেয় প্রতিদিন। ২০১৬-১৭ বছরের হিসেবে এই খাতে দেশের মোট রপ্তানি ছিলো প্রায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ দশমিক নয়-দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট তৈরী পোশাক শিল্পের রপ্তানি করা হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার ১৪৯ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা মোট রপ্তানির প্রায় ৮১ দশমিক দুই তিন শতাংশ। যার সঙ্গে শ্রমিকরা সরাসরি জড়িয়ে আছে। 

অথচ কিছুতেই কাটছে না শ্রমিকদের অভাব-অনোটন ও বিভিন্ন সংকট। অপুষ্টিতে ভুগছে শ্রমিক ও তাদের সন্তানেরা। অর্থের অভাবে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে শ্রমিকের সন্তানেরা। নারী শ্রমিকরা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন। হতাশায় অনেক শ্রমিক গার্মেন্ট কারখানা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। দিনে দিনে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। শ্রমিকের বয়স ৩৫ পার হলেই সে কর্মঅক্ষম হয়ে পড়ছে।

ন্যূনতম মজুরির দাবিতে ঘণায়মান আন্দোলনের মুখে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ২৫ নভেম্বর'২০১৮ রোববার গেজেট জারি করেছে সরকার।
ন্যূনতম মজুরির গেজেট অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য সাতটি ও কর্মচারীদের জন্য চারটি গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের সপ্তম গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা, এরমধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা, খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা। অপরদিকে প্রথম গ্রেডে মজুরি ১৭ হাজার ৫১০ টাকা।

শিক্ষানবিশ শ্রমিক মাসিক সর্বসাকুল্যে পাবেন ৫ হাজার ৭৫ টাকা, এরমধ্যে মূল মজুরি ২ হাজার ৭৫০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ১ হাজার ৩৭৫ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা, খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা। । শিক্ষানবিশ কাল হবে ৩ মাস।

অপরদিকে পোশাক শিল্পের কর্মচারীদের চতুর্থ গ্রেডে ৮ হাজার ৩৭৫ টাকা ও প্রথম গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫ টাকা। শিক্ষানবিশ কর্মচারী মাসিক সর্বসাকুল্যে পাবেন ৬ হাজার ১৬৪ টাকা। শিক্ষানবিশ কাল হবে ৬ মাস।

পোশাক শ্রমিকরা দ্বিতীয় গ্রেডে ১৪ হাজারে ৬৩০ টাকা, তৃতীয় গ্রেডে ৯ হাজার ৫৯০ টাকা, চতুর্থ গ্রেডে ৯ হাজার ২৪৫ টাকা, পঞ্চম গ্রেডে ৮ হাজার ৮৫৫ টাকা ও ষষ্ঠ গ্রেডে ৮ হাজার ৪০৫ টাকা পাবেন।
কর্মচারীরা দ্বিতীয় গ্রেডে ১১ হাজার ৩০০ টাকা ও তৃতীয় গ্রেডে ১০ হাজার ৭৭৫ টাকা ন্যূনতম মজুরি পাবেন। তবে সব গ্রেডেই মূল মজুরি ও বাড়ি ভাড়া ভাতা ছাড়াও ন্যূনতম মোট মজুরির মধ্যে ৬০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, ৩৫০ টাকা যাতায়াত ভাতা ও ৯০০ টাকা খাদ্য ভাতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গেজেটে বলা হয়েছে, ন্যূনতম মজুরির কোন শ্রমিককে এই ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম মজুরি দেয়া যাবে না। তবে এই মজুরির চেয়ে বেশি হারে মজুরি দিলে তা কমানোও যাবে না। শ্রমিকরা প্রতি বছর মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন, মালিকরা এই সুবিধা দিতে বাধ্য থাকবে বলেও গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত ন্যূনতম মজুরি ছিল ৫ হাজার ৩০০ টাকা।

এই নিম্নতম মজুরী কাঠামো ১ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখ থেকে গার্মেন্ট শিল্পের সকল শ্রমিকদের জন্য কার্ষকর হওয়ার কথা। এই বেতন বৃদ্ধিকে শ্রমিকরা সমন্বয়ন বলছেন। এতে সুবিধা আর সুযোগের নাগাল পাচ্ছেন না তারা।

অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলে আরও কর ছাড় পেল পোশাক খাত, তৈরি পোশাক খাতের রফতানিকে উৎসাহিত করতে আরও কর ছাড় দিয়েছে সরকার। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে এ খাতের উৎসে কর কমানো হয়েছিল। দুই মাসের মাথায় জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আবারও বড় ধরনের কর প্রণোদনা দেওয়া হলো। দিনে দিনে সুযোগ সুবিধা বাড়িয়েই নিচ্ছে গার্মেন্ট মালিকেরা। 

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, শতভাগ পোশাক শিল্পের জন্য এবার পরিবহন ব্যয়, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, সিকিউরিটি সার্ভিস, ল্যাবরেটরি টেস্টসহ নানা সেবায় মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর ২০১৮, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে আদেশ জারি করে তা কার্যকর করেছে। এ ছাড়া পোশাক খাতের পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস বিলের ওপর ভ্যাট পরিশোধের নিয়ম আরও শিথিল ও সহজ করা হয়।

এনবিআর বলেছে, এসব সেবার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের ফলে পোশাক খাতের খরচ আরও কমবে, বাড়বে রফতানি আয়। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এতে সেবায় ভ্যাট পরিশোধের ক্ষেত্রে হয়রানি ও এ খাতের খরচ কমবে।
গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে পোশাক খাতের উৎসে কর ১ শতাংশ কমিয়ে দশমিক ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে এ খাতের করপোরেট কর ১৫ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ এবং যারা সবুজ শিল্প স্থাপন করবে, তাদের করপোরেট কর ১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। দেশের মোট রফতানি আয়ের শতকরা ৮০ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ খাতের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২০ শতাংশ। এক ভ্যাট কমিশনার বলেন, এসব সেবা থেকে ভ্যাট তুলে নেওয়ার ফলে পোশাক খাতের উৎপাদন খরচ কমবে। এতে সামগ্রিকভাবে রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানা যায়, আগে পোশাক মালিকরা বন্দর থেকে ফ্যাক্টরিতে মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্য পরিবহনের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতেন। এখন থেকে পরিবহন ব্যয়ে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না। ফলে পোশাক খাতের পরিবহন ব্যয় কমবে। আগে পোশাক কারখানায় ইন্টারনেট ব্যবহার, অনলাইনসহ যে কোনো তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। এনবিআর বলেছে, এখন থেকে পোশাক খাতে ব্যবহূত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে কোনো ধরনের ভ্যাট দিতে হবে না।
পোশাক পণ্য তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল দেশ-বিদেশ থেকে কিনে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে হয়। এ পরীক্ষার জন্য পোশাক মালিকদের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হতো। এনবিআরের অদেশে বলা হয়েছে, ল্যাবরেটরিতে যে কোনো কেমিক্যাল পরীক্ষার জন্য মালিকদের এখন আর ভ্যাট দিতে হবে না।

কিছু কারখানা মালিক শ্রমিকদের বিনোদনের জন্য খরচ করে থাকেন। এতদিন বিনোদনের জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। এখন থেকে পোশাক খাতের যে কোনো ধরনের বিনোদনকে ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু পোশাক কারখানার মালিকরা তাদের শ্রমিকদের কল্যাণে পোশাক-পরিচ্ছদ, জুতা, প্যান্ট ইত্যাদি সরবরাহ করে থাকেন। আগে এসব পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। এখন আর দিতে হবে না।

অনেক পোশাক মালিক সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করে থাকেন। এ নিরাপত্তা সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। এনবিআরের নতুন আদেশে এ সেবার ওপর পুরোপুরি ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে। কোনো পোশাক প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে হলে জোগানদারের বিলের বিপরীতে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। এখন জোগানদার সেবায় কোনো ভ্যাট লাগবে না।

বর্তমানে পোশাক কারখানায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি (ওয়াসা সেবা) ইত্যাদি সেবা বাবদ যে বিল হয় তার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট মওকুফ সুবিধা রয়েছে। এনবিআর যে নিয়ম করেছে, তাতে বলা হয়েছে- রফতানিকারকরা সরাসরি এ সুবিধা পাবেন। এর জন্য ডেডো দপ্তরে যেতে হবে না।

বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে আত্মপ্রকাশ করতে দরকার মোট জিডিপি’র ৮ শতাংশ। যা পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বাদ দিয়ে কোনোভাবেই অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই এখনই শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় এখনই সঠিক পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তা না হলে এই শিল্প শ্রমিক সঙ্কটে পড়তে পারে।

লিখেছেনঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।