গার্মেন্ট টিইউসি’র নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ- শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে আলোচনার পথ ক্রমেই বন্ধ করা হচ্ছে
বেআইনী ভাবে বন্ধ রামপুরার আশিয়ানা গার্মেন্ট কারখানা খুলে দিয়ে সকলবেআইনী চাকুরিচ্যুতি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে এবং গার্মেন্ট শ্রমিক
ট্রেডইউনিয়ন কেন্দ্র’র নেতৃবৃন্দের
নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে আজ ২ফেব্রুয়ারি
২০১৮ সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশঅনুষ্ঠিত হয়েছে। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র
উদ্যোগে অনুষ্ঠিতসমাবেশ থেকে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন এবং
শিল্পে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরার দাবি
জানানো হয়। একই সাথে হামলা-মামলা-নির্যাতন বন্ধ করে আলোচনার পথেসকল শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তির দাবি জানানো হয়েছে।গার্মেন্ট শ্রমিকটিইউসি’র
সভাপতি অ্যাড. মন্টু ঘোষ এর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক কেএমমিন্টুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক টিইউসি’রকার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, সাদেকুর রহমান
শামীম, সাধারণ সম্পাদকশ্রমিকনেতা জলি
তালুকদার, জিয়াউল কবির খোকন, পরিবহন শ্রমিকনেতা হযরত আলী, এমএ
শাহীন, মঞ্জুর মঈন, জয়নাল আবেদীন, গার্মেন্ট
শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয়নেতা প্রবীর
সাহা, প্রস্তাবিত আশিয়ানা গার্মেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিআনিসুর রহমান রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহানাজ, নাহার
প্রমুখ। সমাবেশ শেষেএকটি বিক্ষোভ মিছিল কদমফুল ফোয়ারা ঘুরে
পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজিএমইএ রমনা থানায় গার্মেন্ট শ্রমিক
ট্রেডইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাড. মন্টু
ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, কার্যকরি সভাপতি
কাজী রুহুল আমীন, সাদেকুর রহমান শামীম, মঞ্জুর মঈন,
কেএমমিন্টু, জালাল হাওলাদার,
মোহাম্মদ শাহজাহান, লুৎফর রহমান আকাশসহ আরও ১৫০শ্রমিককে আসামী করে যে মামলা দায়ের করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবংউদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে
আলোচনারমাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পুলিশমালিকপক্ষের
মিথ্যা মামলা গ্রহণ করলেও শ্রমিকপক্ষের মামলা নথিভুক্ত করেনি।তাই আগামী রবিবার আদালতে হামলার ঘটনায় আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা
মামলাদায়ের করবে।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গার্মেন্ট শিল্পে অবাধ ট্রেডইউনিয়ন অধিকার হরণের পাশাপাশি বর্তমানে আলোচনার মাধ্যমে শিল্প বিরোধনিষ্পত্তির পথকে ক্রমেই সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। যার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত
হলো, আশিয়ানা গার্মেন্টের শ্রমিকদের বিজিএমইএ ভবনে আলোচনায় ডেকে আলোচনা না
করেতাদের ওপর হামলা করার ঘটনা। নেতৃবৃন্দ
বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরা
সম্ভব না হলে উন্নত এবং টেকসই শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বছর মে মাসে আশিয়ানা কারখানার
শ্রমিকরা একটিইউনিয়ন গঠন করে আইনী পথে তা নিবন্ধনের
আবেদন করেছিল। মালিক পক্ষ তারসর্বশক্তি নিয়োগ
করে নিবন্ধ না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। শ্রমিকরা যাতেভবিষ্যতে
শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় দায়িত্বশীল কোনো ট্রেড ইউনিয়ননিবন্ধন নিতে না পারে সেজন্য মালিক পক্ষ কারখানার ব্যবস্থাপনা
কর্মকর্তাদেরশ্রমিক সাজিয়ে একটি ভুয়া ইউনিয়ন
নিবন্ধন নেয়ার ব্যবস্থা করে। নেতৃবৃন্দআরও
বলেন, এখানেই না থেমে ইতোপূর্বে কারখানার মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মধ্যেনেতৃস্থানীয়দের চাকুরিচ্যুতির একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ
তারাকারখানার লাইন আয়রণম্যান মামুন কে
বেআইনী ভাবে বরখাস্ত করলে শ্রমিকরা তারপ্রতিবাদ
জানায়। এঘটনার পরের দিন ৩০ জানুয়ারি কারখানা কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণবেআইনীভাবে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। সমস্যা সমাধানে পরের দিন
নির্ধারিতসভাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা মালিক
সমিতি বিজিএমইএ কার্যালয়ে গেলে আলোচনাহবে না বলে
বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেয়ারদাবিতে সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শুরু করলে একপর্যায়ে বিজিএমইএ’র
সিনিয়রঅতিরিক্ত সচিব মনসুর খালেদের নেতৃত্বে
শ্রমিকদের ওপর হামলা করা হয়।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বহু বছর ধরে কারখানা ভিত্তিক অথবা
জাতীয়দাবিতে বিজিএমইএ ভবনে গার্মেন্ট শ্রমিক
টিইউসি’রশত শত কর্মসূচি পালিতহয়েছে। আলোচনায় কখনো সমাধান হয়েছে, কখনো সমাধান না
হওয়ায় আন্দোলন অব্যাহতথেকেছে। কিন্তু
মালিক সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লোহার পাইপ, রড ওলাঠিশোটা হাতে শ্রমিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার এমন ঘটনা নিকট অতীতে
ঘটেনি।নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের চলমান
মজুরি বৃদ্ধির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকেভিন্ন
খাতে প্রবাহিত করার চক্রান্ত হিসেবে এসব ঘটানো হয়েছে কিনা তা খতিয়েদেখতে হবে।সমাবেশ থেকে অবিলম্বে আশিয়ানা গার্মেন্ট খুলে দেয়া, সকলবেআইনী চাকুরিচ্যুতি আদেশ প্রত্যাহার এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার
নিশ্চিতকরার দাবি জানানো হয়। শ্রমিকদের
বিরুদ্ধে হামলা-মামলা-নির্যাতন বন্ধেরদাবি জানানো হয়।
একইসাথে সকল প্রকার শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনারপথ
রুদ্ধ না করে শিল্পে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য মালিক ওসরকারের প্রতি আহ্বান জানানো
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন