Biplobi Barta

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮

মজুরি বোর্ড এ উত্থাপিত প্রস্তাবনা গ্রহণযোগ্য নয়

শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি বেগম শামছুন্নাহার ভূঁইয়া প্রস্তাবিত ১২ হাজার ২০ টাকা মোট মজুরির মধ্যে মূল মজুরি ৭ হাজার ৫০ টাকা, মূল মজুরির ৪০ শতাংশ হিসেবে বাড়ি ভাড়া ২ হাজার ৮২০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার টাকা, যাতায়াত ভাতা ৫০০ টাকা এবং টিফিন ভাতা ৬৫০ টাকা আছে। এ ছাড়া ৬ নম্বর গ্রেডে ১২ হাজার ৯৩০ টাকা, ৫ নম্বর গ্রেডে ১৩ হাজার ৯১০ টাকা, ৪ নম্বর গ্রেডে ১৪ হাজার ৯১০ টাকা, ৩ নম্বর গ্রেডে ১৬ হাজার ১৫০ টাকা, ২ নম্বর গ্রেডে ১৭ হাজার ৫৫০ টাকা এবং ১ নম্বর গ্রেডে ২১ হাজার ৫০ টাকা প্রস্তাব করেন শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি।
 
এ ছাড়া পোশাক কারখানায় কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন ১১ হাজার ৯৫০ টাকা মজুরি প্রস্তাব করেন শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি বেগম শামছুন্নাহার ভূঁইয়া। একই সঙ্গে মূল মজুরির ওপর প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্টের প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া শ্রমিক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য ২টি উৎসব ভাতা এবং মূল মজুরি ২০ শতাংশ হিসেবে বৈশাখী ভাতার প্রস্তাব করেন শ্রমিক প্রতিনিধি।

অন্যদিকে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. সিদ্দিকুর রহমান পোশাক শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে মূল মজুরি ৩ হাজার ৬০০ টাকা, মূল মজুরির ৪০ শতাংশ হারে বাসা ভাড়া ১ হাজার ৪৪০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৩০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ২৪০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা ৭৮০ টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমানের চেয়ে ২০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে মালিকপক্ষ। তারা ৬ নম্বর গ্রেডের জন্য ৬ হাজার ৭৫২ টাকা ৫ নম্বর গ্রেডের জন্য ৭ হাজার ১৭৬ টাকা, ৪ নম্বর গ্রেডের জন্য ৭ হাজার ৬০৪ টাকা, ৩ নম্বর গ্রেডের জন্য ৭ হাজার ৯৮৩ টাকা প্রস্তাব করেছে। তবে ১ এবং ২ নম্বর গ্রেডের জন্য কোনো মজুরি প্রস্তাব করেনি মালিকপক্ষ।

মজুরি বোর্ড এ উত্থাপিত প্রস্তাবনা গ্রহণযোগ্য নয়, কারন সবাই অবগত ২০১৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী বেসিক ৩,০০০ টাকা, গ্রস ৫,৩০০ টাকা নির্ধারণ করেছিল নিম্নতম মজুরী বোর্ড। তখন গার্মেন্ট শ্রমিকদের দাবি ছিল ৮,০০০ টাকা। ৫ বছর পর ২০১৮ সালে এসে গার্মেন্ট মালিকেরা মাত্র ৬০০ টাকা বেতন বৃদ্ধি করতে চায়। মজুরি বোর্ড এ মালিকদের উত্থাপিত প্রস্তাবনা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন হওয়ার সময় আমরা সরকারকে বলেছিলাম "মজুরী বোর্ডে শ্রমিকদের প্রতিনিধি শ্রমিকনেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিক প্রতিনিধি নির্ধারণ করতে হবে। অথচ আমরা দেখলাম গার্মেন্ট মালিকদের পছন্দ মত তাদের অনুগত শ্রমিক প্রতিনিধি নির্ধারণ করলেন। মজুরী বোর্ডের শ্রমিক প্রতিনিধি গার্মেন্ট মালিকদের কতটা অনুগত গতকাল ১৬ জুলাই নিম্নতম বেসিক ৭,০৫০, গ্রস ১২,০২০ টাকা প্রস্তাব করে তার প্রমান দিলেন, যেখানে গার্মেন্ট শ্রমিকেরা নিম্নতম মজুরী বেসিক ১০,০০০, গ্রস ১৬,০০০ টাকা দাবী জানিয়ে আসছে। তাহলে মজুরী বোর্ডে শামসুর নাহার ভুইয়া শ্রমিকদের প্রতিনিধি কিভাবে হল। মজুরী বোর্ডের এই নাটক গার্মেন্ট শ্রমিকেরা দেখতে চায়না। এই ধরনের নাটক গার্মেন্ট শিল্পের জন্য ভাল হবেনা। বর্তমানে গার্মেন্ট মালিকেরা যেমন ভাল থাকতে চায় তেমনি শ্রমিকেরাও একটু ভাল থাকতে চায়।
তাই মজুরী বোর্ডের এই নাটক বন্ধ করে অবিলম্বে গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ১৬,০০০ টাকা নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করুণ।

লেখকঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র । 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন