শ্রমিকের কর্মঘণ্টা এবং ছুটির হিসাব-নিকাশ নিয়ে
বাংলাদেশ শ্রম আইন- ২০০৬ এর ১০০ থেকে ১১৯ এবং ৪৫ থেকে ৫০
ধারাতে বিশদ বর্ণনার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে, যার মাধ্যমে মালিকপক্ষ কোনো শ্রমিককে
অন্যায়ভাবে কাজে বাধ্য করতে পারবে না এবং প্রাপ্য কর্ম বিরতি বা ছুটি থেকেও বঞ্চিত
করতে পারবে না । শ্রম আইনের অনেক আগেই সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদে জবরদস্তি শ্রমকে
নিষিদ্ধ করা হয়েছে । অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যদি এই অনুচ্ছেদ লঙ্ঘিত হয়, তবে আইনত দ-নীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে । সুতরাং শ্রম আইনে বর্ণিত কর্মঘণ্টা এবং
ছুটি একদিকে যেমন শ্রমিকদের অধিকার, তেমনি মালিকপক্ষের জন্য আইনত দায়িত্ব ।
কর্মঘণ্টা : আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসের ইতিহাস
ঘাঁটলে শ্রমিকদের অন্যসব অধিকারের আগে যে অধিকারটি মুখ্য দাবি হিসেবে সামনে আসে, তা হলো দৈনিক ৮ ঘণ্টাকে কর্মঘণ্টা হিসেবে ঘোষণা করা । বলা চলে, এই একটি দাবি নিয়েই ১৮৮৬ সালের পহেলা মে শ্রমিকরা যুক্তরাষ্ট্রের
শিকাগো শহরে হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল । সেখানে পুলিশ ও শ্রমিকের সংঘর্ষে এবং
১০-১২ জনের মৃত্যু, আর বাকিটা ইতিহাস । সেই ইতিহাসকে সম্মান জানিয়েই এবং আন্তর্জাতিক কর্ম ঘণ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্য
রেখে দৈনিক ৮ ঘণ্টাকে কর্মঘণ্টা হিসেবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ ঘোষণা দিয়েছে । সেই হিসেবে সাপ্তাহিক ৪৮ ঘণ্টা ও মাসে
২০৮ ঘন্টা সময় কর্ম ঘণ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ।
ওভারটাইম : অতিরিক্ত কাজের অনুমতি রয়েছে আইনে, তবে তা শ্রমিকের অনুমতি ক্রমে । তবে এই ক্ষেত্রেও আইন সময় সীমা বেঁধে
দিয়েছেন যা মূল কর্মঘণ্টা ৮-এর সঙ্গে অতিরিক্ত ২ ঘণ্টা যোগ করে মোট ১০ ঘণ্টা, অর্থাৎ ওভারটাইমসহ একজন শ্রমিক দৈনিক ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে
পারবেন । সেই হিসেবে সাপ্তাহিক ৬০ ঘণ্টা পর্যন্ত একজন শ্রমিক কাজ করতে পারবেন, তার বেশি করতেও পারবেন না, করাতেও পারবে না । তবে একটি শর্ত রয়েছে যে, বছরে গড়ে যেন সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা ৫৬ ঘণ্টার বেশি না হয় । সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের
জন্য আরো একটি শর্ত দেয়া হয়েছে যে, তাদের ওভারটাইম যেন বছরে সর্বমোট ১৫০
ঘণ্টার বেশি না হয়, তবে এই শর্ত সময়ে সময়ে শিথিল করার
বিধানও রয়েছে ।
অথচ শ্রমিকের অনুমতি ক্রমে কোন প্রতিষ্ঠানেই ওভার টাইম করানো হয়না, জোর
করে বেসির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দিয়ে প্রতিদিন রাত্রি ১০টা ১২টা ০৩টা
পর্ষন্ত কাজ করানো হয় । অসুস্থ্য থাকলেও ছুটি দেওয়া হয়না, যার কারনে অনেক
কারখানাতে অনেক শ্রমিক মারাও গিয়েছে ।
ওভারটাইমের মজুরি : অতিরিক্ত কাজের জন্য অতিরিক্ত ভাতা
দিতে হবে এবং তা হবে ওই শ্রমিকের মূল মজুরি ও মহার্ঘ ভাতা এবং অ্যাডহক বা
অন্তর্বর্র্তী মজুরি (যদি থাকে) তবে এর সাধারণ হারের দ্বিগুণ হারে । তবে যদি কোনো শ্রমিককে ঠিকাদার
ভিত্তিতে মজুরি দেয়া হয়,
তবে সে ক্ষেত্রে শ্রমিক প্রতিনিধিদের
সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মালিক ওই শ্রমিকের গড় উপার্জন নির্ধারণ করে সেই ভিত্তিতে
ওভারটাইমের মজুরি নির্ণয় করবেন ।
অথচ অনেক কারখানাতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রতিদিন
এক জন শ্রমিককে দিয়ে যে পরিমাণ ওভার টাইম করানো হয়, মাস শেষে ওভার টাইম যদি ১৩০
ঘন্টা হয় তাহলে এর ৩০ ঘণ্টা কেটে দেওয়া হয়, মজুরী দেওয়া হয় ১০০ ঘন্টার ।
বিশ্রাম বা আহারের বিরতি : দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি কোনো শ্রমিককে
কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না যদি না ১ ঘণ্টার বিশ্রাম বা খাবারের বিরতি দেয়া না হয় । অর্থাৎ ৬ ঘণ্টার বেশি কাজ করাতে হলে ১
ঘণ্টার বিরতি দিতে হবে । ঠিক তেমনি দৈনিক ৫ ঘণ্টার কাজের জন্য আধা ঘণ্টার বিরতি দিতে হবে । আর দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজের জন্য
একবার ১ ঘণ্টার এবং দুইবার আধা ঘণ্টার বিশ্রাম বা আহারের বিরতি দিতে হবে, অন্যথায় শ্রমিককে কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না ।
কর্ম ঘণ্টার পাশাপাশি নারী শ্রমিকের ক্ষেত্রে
কর্মের সময়সীমাও শ্রম আইন বেধে দিয়েছে, নারী শ্রমিকের অনুমতি ছাড়া সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার বাইরের কোনো কাজ
করতে দেয়া যাবে না ।
অথচ আমরা প্রায় প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি নারী
শ্রমিকদের দিয়ে গভীর রাত্রি পর্ষন্ত কাজ করানো হচ্ছে, যার কারনে কাজ থেকে বাসায়
ফেরার পথে নারী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির স্বীকার হচ্ছে, মাঝে মাঝে ধর্ষন,
অপহরণ এর মত ঘটনাও ঘটছে । জেকার্ড (অটো নিটিং) সোয়েটার কারখানা সহ অনেক
প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের দিয়ে প্রতিদিন ১২ ঘন্টা এক সপ্তাহ দিনে ও এক সপ্তাহ
রাতে ডিউটি করানো হয়, শ্রমিকদের
খাওয়া বা টিফিন বিরতি দেওয়া হয়না, মাসে ৩০ দিন ডিউটি করানো হয়, সপ্তাহে কোন ছুটি দেওয়া
হয় না ।
এবার ছুটির বিধান সম্পর্কে শ্রম
আইন কী বলে তা দেখা যাক ।
সাপ্তাহিক ছুটি : কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে
সাপ্তাহিক ছুটি ১ দিন,
দোকান, বাণিজ্য বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেড় দিন এবং সড়ক পরিবহন
প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অবিছিন্ন ২৪ ঘণ্টার ১ দিনের ছুটি, উল্লেখ্য,
এই ছুটির জন্য কারো মজুরি থেকে কোনো
মজুরি কাটা হবে না । তবে কোনো কারণে কোনো শ্রমিক এই ছুটি থেকে বঞ্চিত হলে যথা শিগগির তাকে
ওই ছুটির দিনের সমান সংখ্যক ছুটি মঞ্জুর করতে হবে । একে ক্ষতিপূরণ মূলক সাপ্তাহিক ছুটি বলা
হয়ে থাকে ।
বাৎসরিক ছুটি : প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছর বয়স পূর্ণ
হয়েছে এমন) শ্রমিকের ক্ষেত্রে টানা একবছর কাজ করার পর কোনো দোকানে বা বাণিজ্যে বা
শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা কোনো কারখানায় বা সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতি ১৮
দিনের জন্য ১ দিন, চা বাগানের ক্ষেত্রে প্রতি ২২ দিনের
জন্য ১ দিন এবং সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে প্রতি ১১ দিনে ১ দিন । অন্যদিকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর বয়স
পূর্ণ হয়নি এমন) শ্রমিকের ক্ষেত্রে কারখানায় ১৫ দিনের জন্য ১ দিন, চা বাগানের ক্ষেত্রে ১৮ দিনের জন্য ১ দিন, দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতি ১৪ দিনের
জন্য ১ দিন । কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে, অনেক শ্রমিক তার এই বাৎসরিক ছুটি
সম্পূর্ণ বা আংশিক ভোগ করে না, সে ক্ষেত্রে তার প্রাপ্য ছুটি পরবর্তী বছরের ছুটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে
যায়। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের এই ছুটি পাওনা বন্ধ হয়ে যাবে যদি তাদের ইতোমধ্যে কারখানা
অথবা সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪০ দিন এবং চা-বাগান বা দোকান বা বাণিজ্য
বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৬০ দিন ছুটি পাওনা হিসেবে অর্জিত হয়েছে । ঠিক তেমনি অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে
কারখানা বা চা-বাগানের ক্ষেত্রে ৬০ দিন এবং দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের
ক্ষেত্রে ৮০ দিন । এই বিধির মূল লক্ষ্য হচ্ছে শ্রমিক যাতে তার বাৎসরিক ছুটি নির্দিষ্ট
দিনের বেশি জমিয়ে না রাখে ।
অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি বেশীর ভাগ প্রতিষ্ঠানে বাৎসরিক
ছুটি দেওয়া হয়না, বছর শেষে শ্রমিকদের কোন টাকা দেওয়া হয়না ।
উৎসব ছুটি : প্রত্যেক শ্রমিক এক ক্যালেন্ডার
বছরে মোট ১১ দিন মজুরিসহ উৎসব ছুটি পাবে । মালিক এই ছুটির দিন-তারিখ স্থির করবেন।
যদি কোনো শ্রমিককে ওই ছুটির দিনে কাজ করতে বলা হয় তবে বিনিময়ে তাকে দুদিনের
মজুরিসহ ক্ষতিপূরণ ছুটি এবং একটি বিকল্প ছুটি বন্দোবস্ত করে দিতে হবে ।
নৈমিত্তিক ছুটি : প্রত্যেক শ্রমিক এক ক্যালেন্ডার
বছরে মোট ১০ দিন মজুরিসহ নৈমিত্তিক ছুটি পাবে । কিন্তু এই ছুটি জমা থাকে না, তাই প্রতিবছরের ছুটি প্রতিবছরেই উপভোগ
করতে হবে । এবং চা-বাগানের শ্রমিকরা এই ছুটির আওতাভুক্ত নন ।
অথচ বেশীর ভাগ কারখানাতে এই ছুটি চাইলেও দেওয়া
হয়না ।
অসুস্থতার ছুটি : শুরুতেই জানা থাকা ভালো, নৈমিত্তিক ছুটির মতো অসুস্থতার ছুটি
জমা থাকে না । সংবাদপত্রের শ্রমিকরা চাকরির মেয়াদের অনূ্যন ১/৮ অংশ সময় অর্ধ
মজুরিতে অসুস্থতার ছুটি পাবেন । বাকি সব শ্রমিকরা এক ক্যালেন্ডার বছরে পূর্ণ মজুরিতে ১৪ দিনের
অসুস্থতার ছুটি পাবেন । তবে এই ছুটি মঞ্জুরের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন আবশ্যক ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব ছুটির জন্য কোন হারে
মজুরি দেয়া হবে । শ্রম আইন এই ব্যাখ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ছুটির অব্যবহিত আগের মাসে যত দিন কাজ করেছে সেই দিনগুলোর জন্য
প্রদত্ত অধিকাল ভাতা ও বোনাস ছাড়া, তার পূর্ণ সময়ের মজুরি এবং মহার্ঘ ভাতা
এবং অ্যাডহক বা অন্তর্বর্র্তী মজুরি (যদি থাকে) এর দৈনিক গড়ের সমান । কিন্তু কিছু শ্রমিক খাদ্যশস্য সরবরাহের
পরিবর্তে নগদ অর্থ পান । তাদের ক্ষেত্রে ওই অর্থ তাদের মজুরির সঙ্গে যোগ হবে ।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৪ দিন আর অপ্রাপ্ত
বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৫ দিনের বাৎসরিক ছুটি মঞ্জুর হলে যথাসম্ভব ছুটি শুরুর আগেই
তাদের মজুরি দিতে হবে ।
অথচ আমরা দেখি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে অসুস্থতার
ছুটি প্রদান না করে শ্রমিকদের কোন পাওনাদি না দিয়েই চাকুরী চ্যুত করা হয় ।
মাতৃত্বকালীন ছুটিঃ ২০০৬ সালে শ্রম আইনের চতুর্থ অধ্যায়ে
মাতৃত্বকালীন ছুটি ও এ সময় বিশেষ সুবিধাদির বিধান বলা হয়েছে । আইনটির ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, সন্তান প্রসবের পর আট সপ্তাহ পর্যপ্ত কোনো নারী শ্রমিক কারখানায় কাজ
করবেন না এবং কোনো নিয়োগকর্তাও এ ধরনের প্রসূতি নারীকে তার কারখানায় সন্তান
প্রসবের পর আট সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়োগ দেবেন না । কোনো নিয়োগকর্তা যদি জেনে থাকেন যে, তার অধীনস্ত কোনো নারী শ্রমিক অন্তঃসত্ত্বা এবং আগামী ১০ সপ্তাহের
মধ্যে তিনি সন্তান প্রসব করতে পারেন, এমতাবস্থায় ওই শ্রমিককে তিনি এমন কোনো
কষ্টকর কাজে নিয়োগ করবেন না, যার কারণে অনাগত শিশুটি মায়ের গর্ভে
ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । সন্তান জন্ম দেয়ার পর ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত এই শিথিলতা চলবে ।
৫০ ধারা মতে, কোনো নারী শ্রমিককে সন্তান প্রসবের পূর্বের ছয় মাস কিংবা সন্তান
প্রসবের পরবর্তী আট মাসের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া যাবে না ।
মাতৃত্বকালীন সুবিধার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে
বর্তমান শ্রম আইনে । আইনটির ৪৬ নং ধারা অনুসারে কোনো শিল্প-কারখানায় নিয়োজিত নারী
শ্রমিক সন্তান প্রসবের আগে ও পরে আট সপ্তাহ করে মোট ষোল সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন
সুবিধার অধিকারী হবেন । এই ১৬ সপ্তাহ প্রসূতি নারীটি মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন এবং
একটি নির্দিষ্ট হারে তার নিয়োগকর্তা কর্তৃক আর্থিক ভাতা পাবেন । তবে মাতৃত্বকালীন
এসব সুবিধা পেতে একজন নারী শ্রমিককে সেই নিয়োগকর্তার অধীনে সন্তান প্রসবের আগে
কমপক্ষে ছয় মাস চাকুরি করতে হবে। দুই বা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকলে মাতৃত্বকালীন
আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে না, কেবল মাতৃত্বকালীন ছুটি পাওয়া যাবে ।
মাতৃত্বকালীন সুবিধা পেতে মৌখিক কিংবা লিখিত
আকারে নিয়োগকর্তা বরাবর নোটিস দিতে হবে যে, আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে তিনি সন্তান
প্রসব করতে যাচ্ছেন । নোটিস প্রাপ্তির পর থেকে নিয়োগকর্তা তার সেই গর্ভবতী
শ্রমিককে কাজ থেকে অনুপস্থিত থাকার অনুমতি দেবেন । এ ধরনের কোনো নোটিস প্রদান করা
না হলে সন্তান প্রসবের পর সাত দিনের মধ্যে উক্ত নারী শ্রমিককে তার নিয়োগকর্তা
বরাবর এই মর্মে নোটিস দিতে হবে যে, এরই মধ্যে তিনি একজন সন্তানের জন্ম
দিয়েছেন । সন্তান প্রসবের পর এই নোটিস দেয়া হলে কেবল পরবর্তী আট সপ্তাহ ছুটি পাবেন
সেই নারী শ্রমিকটি ।
গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হলে সেক্ষেত্রে
নিয়োগকর্তা আর্থিক ভাতা প্রদানের দায় থেকে মুক্তি পাবেন না । আইনের ৪৯ ধারায় এ
সংক্রান্ত বিধান বলা হয়েছে । সন্তান প্রসবকালে কিংবা প্রসবের পর আট সপ্তাহের মধ্যে
যদি নারী শ্রমিকটি মারা যান, সেক্ষেত্রে দেখতে হবে, তার সন্তানটি বেঁচে আছে কি না । সন্তান বেঁচে থাকলে সন্তানের অভিভাবক
মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন । সন্তান মারা গেলে ওই নারীর মনোনীত কেউ সেই ভাতার
অধিকারী হবেন । কাউকে পূর্বে মনোনীত করা না হলে মৃত শ্রমিকের আইনগত প্রতিনিধিরা ওই
ভাতা গ্রহণ করবেন ।
অথচ আমরা দেখতে পায় গার্মেন্টস মালিকরা গর্ভবতী
মায়েরদের ছুটি প্রদান না করে, গর্ভবতী মায়েদের সুযোগ সুবিধা প্রদান না করে এমন
প্রক্রিয়া করা হয় যাতে গর্ভবতী মায়েরা এমনিতেই চাকুরী ছেড়ে চলে যায়, তাদের পাওনা
টাকা টাও দেওয়া হয়না ।
লেখকঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠিক সম্পাদক,
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন