Biplobi Barta

বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের প্রতি বামপন্থী নেতৃবৃন্দ বলেন- বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির যে কোন অপতৎপরতা হরতাল-অবরোধের মত কঠোর কর্মসূচি দিয়ে প্রতিহত করা হবে



নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাও জনগনের জান বাঁচাও-নিয়ন্ত্রণহীন দ্রবমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা ও দৈনন্দিন জীবনের নৈরাজ্য সন্ত্রাস-সংকট নিরসনের দাবিতে আজ ২২ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার, বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার আহবানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত হুশিয়ারি প্রদান করেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ। সমাবেশ পরিচালনা করেন ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মাকর্সবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের আপামর জনগণ আজ দিশেহারা। নিম্নআয়ের মানুষ আধপেটা খেয়ে দিন-যাপন করছে। যেসকল মানুষের আয়ের বেশির ভাগ অংশ ব্যয় হয় খাদ্যদ্রব্য ক্রয়ের জন্য তারা লাগামহীন খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারনে আজ অসহায়। বাজার সিন্ডিকেট, আমলা এবং ক্ষমতাসীন দল ও জোটের নেতৃবৃন্দের অসৎ চক্রের কারসাজির কারনেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও বাংলাদেশে তা হু হু করে বাড়ছে। সরকারের নিস্ক্রিয়তা এসকল অসৎ চক্রকে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, টিসিবির মাধ্যমে বাজারে হস্তক্ষেপ করার মধ্য দিয়ে সরকারকে এসকল অসৎ চক্রের উদ্দেশ্য বানচাল করে দিতে হবে। তারা দরিদ্র মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর দাবিতে পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে প্রচারাভিযান চালানোর জন্য সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কর্মীদের আহ্বান জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিইআরসির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিপণনকারী সংস্থাগুলি বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির অশুভ পাঁয়তারা লিপ্ত রয়েছে। সরকার এসকল লুটেরা মালিক ও আমলাদের মুনাফা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির যে কোন অপচেষ্টা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিহত করা হবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জনগণের দৈনন্দিন জীবনে চলছে নৈরাজ্য। হত্যা-গুম-খুন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষক-সাংবাদিক-ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সব পেশার মানুষই গুম এবং খুনের শিকার হচ্ছে। এ সকল গুমের ঘটনার সাথে সরকারের নানা বাহিনী ও সংস্থার সংশ্লিষ্টতার কথাই বেরিয়ে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা গুমের জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকেই দায়ী করে আসছেন। তাদের দাবি সত্য হলে তা এক ভয়াবহ বিষয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী জনগণকে নিরাপদ রাখার পরিবর্তে তারাই জননিরাপত্তা হরণ করে সন্ত্রাসী ভমিকায় আবির্ভূত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গুম হওয়া মানুষদের তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগনের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা ভাতের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। উপরন্তু জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকারের এই ব্যর্থতার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে নেতৃবৃন্দ দেশের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন