Biplobi Barta

Thursday, August 3, 2017

২২ মে গার্মেন্ট শ্রমিকদের এই দিন বিশেষ দিন

২২ মে গার্মেন্ট শ্রমিকদের এই দিন বিশেষ দিন
লেখকঃ কেএম মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
============================================================================

২২ মে গার্মেন্ট শ্রমিকদের এই দিন বিশেষ দিন । কেননা ২০০৬ সালে ২২ মে গার্মেন্ট শিল্পের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকরা নিম্নতম মজুরী বৃদ্ধি, ছাটাই-নির্যাতন, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সহ ১০ দফা দাবিতে কারখানা থেকে রাজপথে নেমে আসে । কেওকেও বলার চেষ্টা করেন, ২০০৬ সালের ২২/২৩ মে’র এই আন্দলন গার্মেন্ট শ্রমিকদের স্স্ফুর্ত । কিন্তু আসলে কি তাই ? । আমি জানি এই আন্দলন গড়ে তুলতে কতটা শ্রম আছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কয়েক জন শ্রমিক নেতার এবং জামগড়া’র ইউনিভার্স সোয়েটার ও ডিইপিজেডে অবস্থিত রিংসাইন সোয়েটার কারখানার শ্রমিকদের । ২০০৪ সালে ইপিজেড শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের দাবিতে আন্দলনের ধারাবাহিকতার ফল ২০০৬ সালের ২২ মে আন্দলন । ২০০৬ সালের আগে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটি থাকলেও সংগঠনের কার্যক্রম তেমন ছিলনা । ২০০৫ সালের প্রথম দিকে গার্মেন্ট শ্রমিল ট্রেড ইউনিয়ন কান্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির ততকালিন সভাপতি শ্রমিকনেতা ইদ্রিস আলীর সাথে আমার পরিচয় হয়, তখন থেকেই ইদ্রিস আলী, আমি, মফিজ, হক, সাইফুল, মজিবার, শাহিন গাজী, মওলা, তুষার, সুমন সহ আরো অনেকে কারখানায় কারখানায় কিভাবে সংগঠন গড়ে তোলা যায় এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হতো । ২০০৬ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি তুহিন কে সভাপতি ও আমাকে সাধারণ সম্পাদক করে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটি পুনগঠন করা হয় । আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে মহান মে দিবসে বিকেল ০৪টায় ডেন্ডাবর বালুর মাঠে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । সমাবেশে অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি ইদ্রীস আলী, সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন । সমাবেশে ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টস এর শ্রমিকরা মিছিল সহ সমাবেশে যোগদান করেন । ইউনিভার্সের শ্রমিকরা আনেক দিন ধরে মালিক পক্ষের কছে ১২ দফা দাবি জানিয়ে আসছিল কিন্তু মালিক পক্ষ সেই দাবি মানেনিচ্ছিলনা । অন্যদিকে গার্মেন্ট গুলতে নিম্নতম মূল মজুরী ছিল ৯৩০ টাকা, সোয়েটার শ্রমিকদের প্রডাকশনের আগেই পিস রেট নির্ধারন, কথাই কথাই শ্রমিক ছাঁটাই-নির্যাতন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে না দেওয়া, নিয়মিত বেতন পরিশোধ না করা, প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য সহ নানা রকম ক্ষোভ কাজ করছিল শ্রমিকদের । সমাবেশে ইউনিভার্স কারখানার শ্রমিকদের ১২ দফা এবং সকল শ্রমিকদের নিম্নতম মূল মজুরী তিন হাজার টাকা, সোয়েটার শ্রমিকদের প্রডাকশনের আগেই পিস রেট নির্ধারন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত, ছাটাই-নির্যাতন বন্ধ সহ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহব্বান জানানো হয় । ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টস এর শ্রমিকদের দাবি আদায় এর লক্ষে একটি কমিটি গঠন করা হয়, ০৩ মে ২০০৬ ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টস এর শ্রমিকরা লিখিত ভাবে মালিক পক্ষের কাছে ১২ দফা দাবি জানান, মালিক পক্ষ ১৫ দিনের সুময় নেন, এই সুময় এর মধ্য আমরা এলাকার মেসে মেসে বৈঠক করে শ্রমিকদের সংগঠিত করি । ১৯ মে ২০০৬ নবীনগর স্মৃতি সৌধে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ততকালিন উপদেষ্টা বর্তমান সভাপতি এড মন্টু ঘোস আসেন, সেখানে শ্রমিকদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে ২১ মে ২০০৬ জামগডা প্রায়মারী স্কুল মাঠে শ্রমিক সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয় । ২১ মে ২০০৬ বিকেল ০৪ টায় জামগডা প্রায়মারী স্কুল মাঠে শ্রমিক সমাবেশে সন্ত্রাসীরা হামলা করে , হামলার প্রতিবাদে ২১ মে ২০০৬ রাত্রি ১১ টা পর্যন্ত আশুলিয়া থানার সামনে সকল শ্রমিকরা অবস্থান করলেও থানায় সন্ত্রাসীদের নামে কোন অভিযোগ গ্রহন করা হয়নি । দাবি আদায় না করে বাড়ি ফিরবেনা বলে শ্রমিকরা শফত গ্রহন করেন , শ্রমিকরা রুটি, চিড়া, মুড়ি খেয়ে সারা রাত্রি ডেন্ডাবরে অবস্থান করেন । ২২ মে ২০০৬ সকালে মাথায় কাফনের কাপড় বেন্ধে সকাল ১০ টা থেকে জামগড়া ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টস কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসুচি শুরু করে শ্রমিকরা । এক পর্যায়ে অবস্থান কর্মসুচিতে আশে পাশের কারখানার শ্রমিকরা যোগদান করলে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে রুপ নেয় । সুময় যত বাড়তে থাকে সমাবেশ তত বড় হতে থাকে । বেলা ১১ টার দিকে মিছিল বের করে বাইপাইলের দিকে যেতে থাকলে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের মিছিলে রুপান্তর হয় । পুলিশ প্রথম দিকে বাধা দিতে চাইলে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের মিছিলে বাধা দিতে পারেনি । দুপুরের মধ্য এই আন্দলন আশুলিয়া, সাভার, ইপিজেড, জিরানী, গাজীপুর, তেজগাও, মিরপর, নারায়ণগঞ্জ ছড়িয়ে পড়ে । পরবর্তিতে এই মিছিল আর আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছিলনা । মিছিলে অড মন্টু ঘোস ও কাজী রুহুল আমিন থাকার কথা থাকলেও রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে আবুল্লাহ পুর পর্যন্ত এসে আর আশুলিয়াতে আসতে পারেনি । যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হলেও তারা শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান অনেকেই কারন ৯৩০ টাকাতে এক জন মানুষের খেয়ে পরে বেঁচে থাকা যায়না এটা সবায় জানে । আমরা রাত্রি বেলাতে ২৩ মে ২০০৬ কি করনিয় তা নিয়ে আলচনা করি , পুলিশ ও র্যা ব আমাদের খুজতে থাকে আমরা গোপন জায়গা থেকে কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করতে থাকি । ২৩ মে ২০০৬ সকালে বিভিন্ন্য অঞ্চল থেকে মিছিল করার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা যখন বের হই , আমরা দেখতে পাই ইপিজেড সহ সকল কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় যে যার মত করে মিছিল-সমাবেশ করছে । আমরা বুঝতে পারলাম এই আন্দলন শুধু আমাদের আন্দলন আন্দলনে সিমাবদ্ধ নেই, এই আন্দলন এখন সকল শ্রমিকের , যে কারখানায় শ্রমিকদের অনেক অনেক নির্যাতন করার পরেও তারা কোন কথা বলেনি সেই শ্রমিকরাও আজ রাজপথে নেমেছে তাদের দাবির কথা বলার জন্য । এই আন্দলন তখন শুধু গার্মেন্ট শ্রমিকদের ছিলনা, টেক্সটাইল সহ যে খানেই যে কোন ধরনের কারখানা হউক না কেন তারা রাস্তায় নেমে গার্মেন্ট শ্রমিকদের এই আন্দলনের সাথে সংহতি জানাচ্ছিল । বিজিএমইএ নিজে সংঘবদ্ধ হলেও দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সকল শ্রম আইন লঙ্ঘন করে গার্মেন্ট খাতে কোথাও শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ হওয়ার কোন অধিকার দেইনি । মালিক ও শ্রমিকের মাঝখানে অনেক কারখানায় অবসরপ্রপ্ত সামরিক অফিসারদের দিয়ে সামরিক শাসন স্টাইলে শ্রমিক কারখনা পরিচালনা করতেন । কারখানার দেশি-বিদেশি মালিকরা সকল আইনের উর্ধে উঠে যেতে চান । তারা শ্রম আইন, কারখান আইন, ভবন নির্মান আইন কিছুই মানবেনা, সাপ্তাহিক ছুটিও দেবেনা, কেবল কাজের লোকদের মত নারী-পুরুষদের কারখানায় চাকরি দিয়ে তারা বোঝানোর চেষ্টা করেন বাংলাদেশ’কে ধন্য করে দিয়েছে । যার ফলে মালিকরা এক জন শ্রমিকনেতা পাননি যে শ্রমিকদের রাজপথ থেকে কারখানায় ফিরিয়ে আনবে । মালিকরা রীতিমতো রাস্তায় শুয়ে পড়ে ‘আমাদের বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকলেন । সরকার, বিজিএমইএ মিডিয়া সবাই শ্রমিকদের এই আন্দলনকে কেও বললেন বিদেশি ষড়যন্ত্র, কেও বললেন বিরোধী দলের উস্কানি । শ্রমিকদের মূল ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করতে থাকলেন । সীমাহীন মজুরী বঞ্চনা, গার্মেন্ট শিল্পে সর্বত্র কর্মপরিবেশ এতো বেশি খারাপ এবং মজুরি এতো কম যে, তীব্র বঞ্চনাবোধ থেকে কিশোর ও সদ্য তরুণ-তরুণী শ্রমিকরা সর্বত্র র্যাঞব, পুলিশ, বিডিয়ার এবং মালিকদের পেটোয়া বাহিনীর দমন-পীড়ন অগ্রাহ্য করে অভূতপূর্ব ভাবে যার যার যায়গা থেকে সংগঠিত হয়ে আন্দলন চালিয়ে যেতে থাকে । ২৩ মে ২০০৬ দুপুরে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি ইদ্রিস আলী ফোন করে জানান, আমরা যে কইজন পারি পল্টন চলে আসি, আমি বললাম কেন? তিনি বললেন সচিবালয় যেতে হবে শ্রম মন্ত্রীর সাথে মিটিং আছে । আমি, তুহিন, মফিজ, পান্নু সহ আরো কয়েক জন পল্টন যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি পাচ্ছিলাম না, শ্রমিকরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছে । অনেক কষ্টে একটা ট্যাম্পু ঠিক করে আমরা পল্টন আসি । বিকেল ৪ টায় আমি, ইদ্রিস আলী, মন্টু ঘোষ, কাজী রুহুল আমিন, সাদেকুর রহমান শামিম, তুহিন, পান্নু, কুদ্দুস সহ ২৫ জন সচিবালয় গিয়ে দেখি , ততকালিন মন্ত্রী মান্নান ভুইয়া, আব্দুল্লা আল নোমান, শ্রম মন্ত্রী আমানুল্লাহ আমান ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সহ আরো আনেকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন । উনারা আমাদের বললেন ‘আপনাদের কি দাবি বলুন আমরা মেনে নেওয়ার ব্যাবস্থা করছি, আপনারা শ্রমিকদের এই আন্দলন বন্ধ করতে বলুন’ । আমরা বললাম ইউনিভার্স এর শ্রমিকদের এই আন্দলন এখন আর তাদের একার না এই আন্দলন এখন সকল শ্রমিকদের, তাই আপনারা সকল শ্রমিক সংগঠন এবং গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কে ডাকুন তার পর আলচনা করে সমাধান করুন, সকলেই রাজি হলেন, ২৪ মে ২০০৬ তারিখ বিকেল ০৪ টায় সচিবালয় অডোটরিয়ামে ত্রিপাক্ষিক সভা করার সিদ্ধান্ত হলো । সকল শ্রমিক সংগঠনের নামের তালিকা তাদের কাছে না থাকার কারনে কাজী রুহুল আমিন নিজে হাতে নামের তালিকা তৌরি করে দিলেন । সেই মোতাবেক ২৪ মে ২০০৬ বিকেলে ত্রিপাক্ষিক সভায় তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান এর সভাপতিত্বে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভুইয়া, মৎস ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং বাণিজ্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হাফিজ উদ্দিন, শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদ, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র সহ ১৬ টি গার্মেন্ট শ্রমিক সংগঠন, বিজিএমইএ-বিকেএমইএ’র প্রতিনিধিত্বে ১১ দফা চুক্তি হয় । চুক্তি গুল হল ০১, বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত অনভিপ্রেত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অবিলম্বে তা বন্ধ করতে ঐকমত্য পোষণ করা হয় । ০২, সাম্প্রতিক গার্মেন্ট শিল্পের আন্দলনকে কেন্দ্র করে গাজীপুর, টঙ্গী, সাভার ও আশুলিয়া থানায় দায়েরকৃত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলা প্রত্যাহার করা হবে । গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করা হবে । ০৩, আন্দোলনকারী কোন শ্রমিককে চাকরীচ্যুত করা হবেনা । ০৪, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার স্বার্থে অবিলম্বে সকল বন্ধ কারখানা চালু করা হবে । ০৫, সকল শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেওয়া হবে । ০৬, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দরকষাকষি করার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করা হবেনা । ০৭, প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী সাপ্তাহিক এক দিন ছুটি প্রদান করা হবে । প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী অন্যন্য ছুটি প্রদান নিশ্চিত করা হবে । ০৮, নিয়মিত বেতনভোগী শ্রমিকদের দিয়ে আট ঘন্টার বেশি কাজ করালে শ্রম আইন অনুসারে ওভারটাইম ভাতা দেওয়া হবে । ০৯, প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী সবেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান করা হবে । ১০, মজুরী পুনঃনির্ধারণের জন্য নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন করা হবে । ১১, বোর্ড গঠনের তারিখ থেকে নিম্নতম মজুরি তিন মাসের মধ্যে রোয়েদাদ ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করা হবে । অন্য বিষাদি অনুর্ধ এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হবে । এই ১১ দফা চুক্তি হওয়ার পর আস্তে আস্তে শ্রমিকরা কারখানাতে ফিরতে থাকে । ১৩ বছর পর ৩০ মে ২০০৬ ঢাকা জেলা জজ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করা হয় । মজুরি বোর্ড ২২ অক্টোবর ২০০৬ বেসিক ১১২৫ টাকা, বাড়ি ভাড়া ৩৩৭ টাকা, চিগিৎসা ভাতা ২০০ টাকা মোট ১৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা গার্মেন্ট শিল্পের জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষনা করেন । তখন শ্রমিকদের দাবি ছিল তিন হাজার টাকা । তখন গার্মেন্ট মালিকরা বলেছিলেন ১৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা মজুরি দিলে অনেক গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে । তাদের সেই কথা তারা নিজেরাই ভুল প্রমান করে দিয়েছে । ২০০৬ সালে গার্মেন্টে শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২২ লক্ষ আর আজ ৫০ লক্ষের বেশি শ্রমিক গার্মেন্টে কাজ করে । ২০০৬ সালের পর মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দমন করার জন্য ইন্ডাস্ট্রেরিয়াল পুলিশ গঠন করেছে তার পরেও দমন-পিড়োন উপেক্ষা করে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে । আজ ২০১৭ সালে এসে আমারা দেখতে পাচ্ছি শ্রমিকরা সংগঠিত থাকলেও সুবিধা বাধিতা, এনজিও করন, মালিকের দালালি অনেক শ্রমিকনেতাদের কারনে ১১ বছরে শ্রমিকদের যে টুকু অধিকার প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা ছিল তা পায়নি ।

No comments:

Post a Comment