মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন এবং কর্তৃপক্ষের অতিমাত্রায় বলপ্রয়োগের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেই সঙ্গে এই সহিংসতা বন্ধে দেশটির সরকারের প্রতি ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল বুধবার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাখাইনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের কারণে ৩ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে এক বিবৃতিতে ওই উদ্বেগ, নিন্দা ও আহ্বানের কথা জানান। সেই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক সহায়তাকর্মীদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠক শেষে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি জাতিসংঘে ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূত তেকেদা আলেমু সাংবাদিকদের বলেন, রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান অভিযানের সময় ব্যাপক সহিংসতার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিষদের সদস্যরা এ সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠক শুরুর আগে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গাদের ওপর এই নিপীড়নকে ‘কার্যত জাতিগত নির্মূল’ বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া রাখাইনে বেসামরিক লোকজনের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণকে ‘উদ্বেগজনক’ এবং ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গুতেরেস বলেন, ‘আমি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যক্তিদের ফেরার অধিকার স্বীকার করে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ‘জাতিগত নির্মূলের’ শিকার হচ্ছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘যখন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে, তখন সেই পরিস্থিতি তুলে ধরতে এর চেয়ে ভালো কোনো শব্দ আপনি কি খুঁজে পাবেন?’ তিনি এ সময় রাখাইনে ‘গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে’ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দেওয়া অথবা এমন কোনো আইনি মর্যাদা দেওয়ারও আহ্বান জানান, যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন