বার্ধক্যজনিত কারণে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিজ বাড়িতে জীবন- মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক কমরেড জসিম উদ্দিন মন্ডল।
বর্তমানে তাঁর বয়স ৯৭ বছর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। বেশ কিছু দিন ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ একে খুরশিদ আলমের তত্বাবধায়নে চিকিৎসা নেয়ার পর এখন তাকে ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিম টেংরী, মুক্তির মোড় নিজ বাড়িতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছিলেন। গেল কয়েকদিন ধরে খাওয়া দাওয়া ও পায়খানা-প্রসাবও বন্ধ হয়ে গেছে।
মেয়ে আসমা আলো জানান, তিনি কাউকে চিনতে পারছেন না। আহার নিতে কষ্ট হচ্ছে, আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে এই পুরোধা বিপ্লবী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার দল বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও পরিবার এই বিপ্লবী নেতার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য: কমরেড জসিম উদ্দিন মন্ডল। আপাদমস্তক প্রজ্ঞাবান একজন রাজনীবিদ। সারাজীবন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য লড়েছেন, রাজপথে থেকেছেন জেল খেটেছেন। ১৯২২ সালে নদিয়া জেলা (বর্তমান কুষ্টিয়া) দৌলতপুর থানার খালিদাসপুর গ্রামে নানার বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম হাওস উদ্দিন মন্ডল ও মাতা মরহুমা জহুরা খাতুন। রাজনীতির হাতে খড়ি কলকাতায়। বৃটিশ খেদাও আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলনে তার ছিল সক্রিয় ভূমিকা। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি জেলে থাকলেও রাজপথের মিছিলে থাকতো তার মন। ১৯৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ গণ অভ্যুত্থানসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন নিবেদিত সংগঠক।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তিনি প্রায় ২ যুগ জেল খেটেছেন। কমরেড উপাধি পান ১৯৪০ সালে। খেটে খাওয়া মানুষের দাবি আদায়ের জন্য তার যে রাজনীতির দর্শন তিনি সেটা বুকে লালন করে যাচ্ছেন যথারীতি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন