৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বিকেল ৪:৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারার প্রতিবাদে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘কিছুদিনের মধ্যে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম ৩০ থেকে ৩৫ পয়সা বাড়তে পারে। তবে সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি দিলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না।’ মন্ত্রীর এহেন বক্তব্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা পিডিবি কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান না, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ফলে পিডিবি কেন তেল আমদানী করবে? মন্ত্রীর এ প্রস্তাবে দুর্নীতি-লুটপাটের আরেকটি খাত যুক্ত হবে। সভায় বলা হয়, বিপিসি যে দামে তেল আমদানী করবে তার উপর আমদানী শুল্ক, ভ্যাট, ট্যাক্স ইত্যাদি বাদ দিয়ে পিডিবিকে সরবরাহ করলেই তো দাম বাড়ানোর কোন প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যথেষ্ঠ কমলেও দেশে কমানো হচ্ছে না। সমাবেশে বক্তবাগণ বলেন, সরকার বলছে বিদ্যুৎ খাত ৩৮১৬ কোটি টাকা ঘাটতিতে আছে। তা পূরণ করার জন্য মূল্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বর্তমান রেট থেকে ২৫ পয়সা মূল্য বাড়ানো হলে সরকার পাবে প্রায় ১৮৫৫ কোটি টাকা। শুধু মাত্র ফার্নেস ওয়েলের মূল সমন্বয় করা, সিস্টেম লস, পরিচালনা ব্যয় ও কুইক রেন্টাল তেল না দিয়ে গ্যাস দিয়ে উৎপাদন করলে বর্তমান অবস্থায় ৫০০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিইআরসি গণশুনানী করার কথা। কিন্তু এর আগেও কয়েকবার শুনানীর পর দেশের সকল মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারীভাবে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে বিইআরসি। তাহলে জনগণের মতামত যদি আমলে না নেয়া হয় তবে গণশুনানীর এই নাটক কেন বিইআরসি করে। তাই দাম বৃদ্ধি নয়, বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য গণশুনানী করা প্রয়োজন। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমায় বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমছে। বিইআরসি দাম কমানোর জন্য গণশুনানী না করলে প্রতিবারের মতোই এ গণশুনানী গণপ্রতারণা হিসেবে গণ্য হবে। বক্তাগণ বলেন, সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি, লুটপাট ও রাজনৈতিক অভিলাশ বাস্তবায়ন করার জন্য দাম বাড়িয়ে জনগণের ভোগান্তি কোনভাবেই সহ্য করা হবে না। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা বন্ধ করা না হলে ঘেরাও-হরতালসহ যেকোন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ঢাকা নগর শাখার আহ্বায়ক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ ঢাকা নগর কমিটির সদস্য সচিব জুলফিকার আলী, খালেকুজ্জামান লিপন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন, প্রকৌশলী শম্পা বসু প্রমুখ। সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিপিবির কেন্দ্রীয় অন্যতম সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বাম মোর্চার নেতা আকবার খান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে হাইকোর্ট মোড় ঘুরে, তোপখানা রোড, পুরানা পল্টন, দৈনিক বাংলা, বায়তুল মোকাররম হয়ে তোপখানা রোডে এসে শেষ হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন