Biplobi Barta

শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭

নির্বাচনী ব্যবস্থা : ‘আমার ভোট আমি দেব...’


দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে ‘প্রহসনে’ পরিণত করা হয়েছে। যারা এই প্রহসনের ‘কারিগর’ এবং যারা এর ‘শিকার’ - তারা উভয়ই তথা সমগ্র জনগণই সে কথা ভালোভাবেই জানে ও বোঝে। এই অবস্থা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। নির্বাচন যে জনমতের প্রতিফলন ঘটানোর প্রক্রিয়া, সাধারণ মানুষ সে কথা প্রায় ভুলেই গেছে। তারা দেখছে যে, নির্বাচন এখন হয়ে উঠেছে ‘জালিয়াতির’ কম্পিটিশন। এদিকে তথাকথিত নির্বাচনকে ঘিরে একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কায়েমি স্বার্থবাদী চক্র গড়ে উঠেছে। একই সঙ্গে, এই প্রহসনের খেলার আদলে এক ধরনের সামাজিক মনস্তত্ত্ব এবং সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। সদিচ্ছা থাকলেও ভবিষ্যতে এসব গণতন্ত্রবিরোধী উপাদান থেকে দেশকে মুক্ত করা সহজ কাজ হবে না। আকাক্সিক্ষত সুষ্ঠু নির্বাচন এখন ধান্দাবাজিচক্রের ফাঁদে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থা সৃষ্টির জন্য দেশি-বিদেশি লুটেরা শোষক শ্রেণিই দায়ী। শাসক-শোষক শ্রেণির মদদে দেশের দুই বড় বুর্জোয়া দল নির্বাচনকে জালিয়াতিতে পরিণত করেছে। এ ধরনের কোনো দলের হাতে যতদিন ক্ষমতা থাকবে ততদিন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ন্যূনতম গণতন্ত্র বজায় রাখা সম্ভব হবে না। ফলে দেশে সংঘাত, নৈরাজ্য, অনিশ্চয়তা অব্যাহতই থাকবে।
এ কথা সর্বজনস্বীকৃত যে, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অপরিহার্য। সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও সত্য যে, শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকলেই হবে না, নির্বাচনকালীন সরকারও যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তার নিশ্চয়তাও অপরিহার্য। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতার অর্থ কী? এ বিষয়ে বলা যায়, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার জন্য যেসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে সেগুলো হলো - নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পর্কিত সব বিষয়ে তার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের আইনগত বিধান, সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তার কাজ করার ব্যবস্থা, তার আর্থিক সক্ষমতার নিশ্চয়তা ইত্যাদি। অন্যদিকে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এক. ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ শুধু রুটিন কাজ করবে, তার ক্ষমতার এখতিয়ার ‘সাধারণ সময়ের সরকারের’ চেয়ে প্রভূত পরিমাণে কম হবে এবং ‘সাধারণ সময়ের সরকার’ থেকে একটি ভিন্ন চরিত্রের সরকার হবে (সে সরকার যে ব্যক্তিদের নিয়েই গঠিত হোক না কেন)। দুই. নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের পরিপূর্ণ কর্তৃত্বে, কোনো সরকার বা সরকারপ্রধানের অধীনে নয়।
অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কিত এ বিষয়টি যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ বিষয়গুলোই ‘একমাত্র’ বিষয় নয়, এমনকি ‘প্রধান’ বিষয়ও নয়। কিন্তু বুর্জোয়া দলগুলো তাদের নির্বাচনব্যবস্থা সম্পর্কিত বিতর্কে এ বিষয়টিকেই ‘কেন্দ্রীয়’ ও বস্তুত ‘একমাত্র’ বিষয় করে তুলেছে।
অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার প্রয়োজন। কিন্তু সেটুকুই যথেষ্ট নয়। কারণ টাকার খেলা, টাকাওয়ালাদের নিয়ন্ত্রণ, পেশিশক্তির দাপট, হোন্ডা-গু-ার শোডাউন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হাত করার ফন্দি-ফিকির, নানা কারসাজি ও ‘ট্রিক্স’-এর আশ্রয় গ্রহণ, সাম্প্রদায়িক প্রচারণার ধূম্রজাল বিস্তার করে জনমতকে বিভ্রান্ত করা ইত্যাদি হলো অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে প্রধান অন্তরায়। অথচ লক্ষণীয় বিষয় হলো, দেশের বড় বুর্জোয়া দলগুলো এসব বিষয়ে একেবারেই নিশ্চুপ। বেশ বোঝা যাচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে যা চলছে তা অব্যাহতই থাকুক - এ বিষয়ে তারা একমত।
কিন্তু নির্বাচনকে এভাবে জালিয়াতির কম্পিটিশন হয়ে পড়া থেকে উদ্ধার করা খুবই জরুরি কর্তব্য। আর তা করতে হলে নির্বাচনব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন হবে, তার প্রধান কয়েকটি হলো ---
এক. ‘ভোট অনুপাতে আসন’ তথা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু করা : এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজ নিজ বক্তব্য, কর্মসূচি ও ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে ভোটের জন্য হাজির হবে। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, পার্লামেন্টে সে দল তত শতাংশ আসন পাবে। দলগুলো আগেই অগ্রাধিকারমূলকভাবে যে তালিকা ঘোষণা করে রাখবে এবং তা থেকে সর্বাগ্রে থাকা সেই নির্দিষ্টসংখ্যক ব্যক্তি সংসদ সদস্য হবেন। গোটা নির্বাচনব্যবস্থাকে এই নতুন পদ্ধতির ভিত্তিতে ঢেলে সাজাতে হবে। [এই নতুন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমার সংক্ষিপ্ত লেখা এই পত্রিকার গত সপ্তাহের সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। সেটি দেখে নিতে পারেন - লেখক]
দুই. নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা : একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব তফসিল ঘোষণার যুক্তিসঙ্গত সময়ের আগে থেকেই শুরু করতে হবে এবং মোট ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। ভবিষ্যতে প্রার্থীদের প্রধান-প্রধান নির্বাচনী কাজকর্মের ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে পরিপূর্ণভাবে বহন করতে হবে। প্রার্থীদের ছবিসহ পোস্টার, হ্যান্ডবিল, পরিচিতি, ইশতেহার ইত্যাদি নির্বাচন কমিশন থেকে ছাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে প্রার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে অতি সামান্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে।
প্রার্থী হওয়ার জন্য জামানতের পরিমাণ সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা করতে হবে। ভোটার তালিকার সিডি কেনার বাধ্যবাধকতা বাতিল করে প্রার্থীদের বিনামূল্যে ভোটার তালিকা সরবরাহ করতে হবে।
প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একজন করে কর্মকর্তাকে প্রতিজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সার্বক্ষণিকভাবে মনিটর করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সে সম্পর্কে দৈনন্দিন ভিত্তিতে রিপোর্ট দিতে হবে। প্রার্থী ও তার পরিবারের সদস্যদের সহায়-সম্পদের পূর্ণ বিবরণী এবং প্রার্থীর নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাব সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে উন্মুক্ত দলিল হিসেবে রাখতে হবে এবং প্রচারমাধ্যমকে তা সরবরাহ করতে হবে। যে কোনো ভোটারকে এসব বিবরণী ও হিসাবের তথ্য চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিতে হবে।
নির্বাচনী কাজের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৭ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে এবং তা করতে না পারলে নির্বাচিত সদস্যের শপথ গ্রহণ বন্ধ রাখতে হবে। ওই বিবরণীর যথার্থতা ‘সুয়োমোটো’ যাচাই করার ব্যবস্থা করতে হবে। আয়-ব্যয় ও সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিন. নির্বাচনকে সন্ত্রাস, পেশিশক্তির প্রভাব ও দুর্বৃত্তমুক্ত করা : নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে যে কোনো প্রকার বল প্রয়োগ, অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন ইত্যাদি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এ ধরনের ঘটনায় কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে।
কোনো প্রার্থী অথবা রাজনৈতিক দলের পক্ষে পেশিশক্তির মহড়া, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনী কাজে সন্ত্রাসী-অপরাধী ব্যক্তিকে ব্যবহার ইত্যাদি কঠোরভাবে রোধ করতে হবে।
চার. নির্বাচনে ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা ও আঞ্চলিকতার অপব্যবহার রোধ করা : নির্বাচনে ধর্মের সর্বপ্রকার অপব্যবহার ও সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণার ভিত্তিতে ভোট চাওয়া নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। ধর্মীয় উপাসনালয়, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ, ওয়াজ মাহফিল, ধর্মসভায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার, পোস্টার-হ্যান্ডবিল বিলি নিষিদ্ধ করতে হবে। ‘আঞ্চলিকতা’র ধুয়া তুলে প্রচারণা ও ভোট চাওয়া নিষিদ্ধ করতে হবে।
পাঁচ. নির্বাচনে সবার সমসুযোগ নিশ্চিত করা : পোস্টার, লিফলেট, বৈদ্যুতিক বিজ্ঞাপন, মাইক, নির্বাচনী ব্যানার, দেয়াল লিখন, গেট নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ে যেসব নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা আছে সেসবের ব্যতিক্রমহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকেই ‘সুয়োমোটো’ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তার মাধ্যমে সব প্রার্থী ও দলের মহাসমাবেশ, সমাবেশ, র‌্যালি, জনসভা ও অন্যান্য সব নির্বাচনী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিধিবিধান মেনে চলা হচ্ছে কিনা তার সার্বক্ষণিক ও পুঙ্খানুপুঙ্খ মনিটরিং ও কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে। এসব প্রতিটি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং লঙ্ঘনকারীদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।
ছয়. নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণে ও নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা বিধান করা : নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রকাশ্য শুনানির ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, উন্মুক্ত ও কার্যকর করতে হবে। সাধারণভাবে ভোটারের সমসংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের তালিকা এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচনের কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগেই প্রার্থীদের কাছে সরবরাহ করতে হবে, যাতে এ বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে তা নির্বাচনের আগেই নিষ্পত্তি করা যায়।
সাত. নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও বিধির সংস্কার করা : সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর প্রধান, সাবেক প্রধান বিচারপতি, গণ্যমান্য নাগরিক প্রমুখের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নিয়ে ‘সিলেক্ট কমিটি’ গঠন করতে হবে এবং সেই কমিটির পরামর্শের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিযুক্তি প্রদান করার ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মক্ষম সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে পরিপূর্ণ স্বাধীন করতে হবে এবং এ জন্য বাজেটে এমনভাবে সরাসরি অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে যাতে ওই অর্থ ছাড় করার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্তৃত্ব না থাকে। নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের কাজ নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে স্বতন্ত্র টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাসহ প্রযুক্তিগত আধুনিক ব্যবস্থাদিতে সজ্জিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনই তার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেবে। নির্বাচন কমিশনকে সব সময়, বিশেষ করে নির্বাচনের সময় যথেষ্ট সংখ্যক জনবল ও পর্যাপ্ত সাহায্য সরবরাহ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে যে কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্বাচনকালীন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নির্বাচন কমিশনে ন্যস্ত হবেন। এই সময়কালে তারা কোনো অপরাধ বা কর্তব্যে অবহেলা করলে সে জন্য নির্বাচন কমিশন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে এবং সরকার ও প্রশাসন তা মানতে বাধ্য থাকবে।
নির্বাচনী বিধি প্রণয়নের অধিকার নির্বাচন কমিশনের থাকবে। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশন আইন লঙ্ঘনকারীদের আটক ও কারাদ- প্রদান করতে পারবে এবং এমনকি অতি গুরুতর লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলও বাতিল করতে পারবে।
এ ছাড়া যতদিন ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা’ প্রবর্তিত না হচ্ছে ততদিন নিম্নোক্ত আরও তিনটি ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবেÑ
আট. নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা : সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি ভোটে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
নয়. প্রতিনিধি প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা : নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এলাকার জনগণ প্রয়োজনে যাতে ওই প্রতিনিধি প্রত্যাহার করতে পারে তার বিধান প্রবর্তন করতে হবে।
দশ. ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা : কোনো প্রার্থীকেই পছন্দ না হলে অথবা অন্য কোনো কারণে কোনো ভোটার যদি কোনো প্রার্থীকেই ভোট দিতে না চান - তা হলে তার সেই অভিমত প্রকাশের জন্য ‘না’ চিহ্নে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
নির্বাচনকে আবার তামাশায় পরিণত করা হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থার ওপর জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ঘটনা আজ এমন অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে যে, চলতি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে ঢেলে সাজানো ছাড়া তার ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

লেখকঃ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম : সভাপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)




Post-editorial written by Mujahidul Islam Selim published in the 15th. October issue of Daily Amader Shomoy.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন