Biplobi Barta

শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

রাজাকারদের 'না' বলতে হবে, তাই বলে দুরাচারকে 'হ্যাঁ' বলতে হবে কেন?

 
একাত্তরে যে অল্পসংখ্যক বাঙালি হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করে, অথবা তাদের সহযোগিতায়, মানবতাবিরোধী নানা ধরনের অপরাধ করেছে তারা লোকমুখে 'রাজাকার' বলে আখ্যাায়িত। এসব 'রাজাকাররা' একাত্তরে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, জোর করে ধর্মান্তর, মানুষকে এলাকা ছাড়া করা ইত্যাদি বর্বর-অমানবিক কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে, এসব কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে অথবা তাতে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে। তাদের এসব যুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো ক্ষমা থাকতে পারে না। বর্তমানে এসব 'রাজাকারদের' বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্য দিয়ে একটি জরুরি জাতীয় কর্তব্য সম্পাদিত হচ্ছে। এ কর্তব্য অসম্পন্ন রেখে জাতির অগ্রগতি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। চার দশক ধরে এ কর্তব্য সম্পাদনের প্রক্রিয়া বন্ধ থেকেছে। বিলম্বে হলেও অত্যাবশ্যক এই কাজে এখন হাত দেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সন্তুষ্টির বিষয়।
যেসব 'রাজাকার' মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদের বিচার ও সাজা হওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, তাদের কৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হয়ে যে লাখো মানুষ শহীদ হয়েছে, পঙ্গু ও আহত হয়েছে, ধর্ষিত হয়েছে, গৃহহারা-সম্পদহারা হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে— ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য তাদের মৌলিক অধিকার পূরণের কর্তব্য হিসেবে এই বিচার হওয়া প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, অপরাধের বিচার ও সাজা থেকে দায়মুক্তির অশুভ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে ভবিষ্যতের জন্য আরো গুরুতর বিপদের পটভূমি তৈরি করা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই বিচার হওয়া প্রয়োজন। তৃতীয়ত, দেশে আইনের শাসন সুদৃঢ় করার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই বিচার হওয়া প্রয়োজন। চতুর্থত, ইতিহাসের কলঙ্ক মোচনের জন্য এই বিচার হওয়া প্রয়োজন। পঞ্চমত, মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত অনেক কর্তব্যের মধ্যে প্রধান একটি কর্তব্য সম্পাদন করার জন্য এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।
সেই বিচার প্রক্রিয়া এখন এগিয়ে চলছে। এর মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কর্তব্য সম্পন্ন হচ্ছে। ব্যাপক দেশবাসী এই পদক্ষেপকে দৃঢ় সমর্থন দিচ্ছে। পাশাপাশি, একাত্তরের 'রাজাকার' শক্তি ছলেবলে কৌশলে এবং অর্থ-ষড়যন্ত্র-অন্তর্ঘাত চালিয়ে বিচার প্রক্রিয়া বানচালের মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। একাত্তরের আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষ তথা সাম্রাজ্যবাদ, পাকিস্তান, প্রতিক্রিয়াশীল আরব রাষ্ট্র প্রভৃতি শক্তিও 'রাজাকারদের' বিচার বানচালের অপচেষ্টায় মদদ দিচ্ছে। 'রাজাকারের' বিচারের প্রশ্নে দু'পক্ষ এখন মুখোমুখি। আজ বজ্র নিনাদে জাতিকে উচ্চারিত করতে হবে,— রাজাকারকে 'না' বলুন!
প্রশ্ন হলো, রাজাকারকে 'না' বলতে হবে ঠিকই, কিন্তু সেজন্য কি দুর্নীতি-অনাচারকে 'হ্যাঁ' বলতে হবে? ইহলৌকিক জীবনের দৈনন্দিন জীবন-যন্ত্রণায় কাতর আপামর দেশবাসীর মনে জেগে ওঠা এ প্রশ্নকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের জাতীয় কবি নজরুল লিখে গেছেন—
'ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ,
চায় শুধু ভাত, একটু নুন।'
'রাজাকারের' বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া খুবই প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সে জন্য কি 'নুন-ভাতের' জন্য মানুষের আকুতি পূরণের বিষয়কে পেন্ডিং রাখতে হবে? সে বিষয়টিকে পেন্ডিং রেখে কি 'রাজাকারের' বিচার প্রক্রিয়াই যথার্থভাবে সম্পন্ন করা যাবে? আরো গুরুতর প্রশ্ন হলো, দুর্নীতি-লুটপাট-দুরাচারের শক্তিকে প্রশ্রয় দিয়েও সেই শক্তিকে পাশে নিয়ে কি আদৌ 'বিচার বানচালের শক্তিকে' মোকাবিলা করা যাবে?
একথা সত্য যে, জাতির কলঙ্কমুক্তির জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনকারী 'রাজাকারদের' বিচার হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু একই সাথে একথাটিও সত্য যে, জাতির কলঙ্কমুক্তির বিষয়টি শুধু এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জাতির কলঙ্ক মোচনের জন্য 'রাজাকারদের' বিচার হওয়া প্রয়োজন, কিন্তু সেটুকুই যথেষ্ট নয়। ঘুষ-দুর্নীতি, নৈতিক অবক্ষয়, বেপরোয়া লুটপাট, দলবাজি-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-আর্থিক কেলেঙ্কারি, নিয়োগ বাণিজ্য-তদবির ব্যবসা, ক্যাডার-মাস্তান-গডফাদারদের দৌরাত্ম্য, শ্রেণি বৈষম্য-ধন বৈষম্য, গৃহকর্মী আদুরীর কাহিনীর মতো অমানবিক জানা-অজানা অগণিত ঘটনা ইত্যাদিতে দেশ আজ আচ্ছন্ন। এসব কি জাতির কলঙ্ক নয়? কলঙ্কের এসব উপাদানকে প্রশ্রয় দিয়ে ও ক্রমাগত লালন করে শুধু 'রাজাকারের' বিচার দিয়ে কি জাতির কলঙ্কমোচন সম্ভব? না, কখনোই না!
দেশের বড় দুটি বুর্জোয়া দল এসব সরল কথা বোঝে বলে মনে হয় না। এসব কথা তাদের উপলব্ধির আওতার বাইরে চলে গেছে। কিম্বা সেসব কথা উপলব্ধি করলেও, সে অনুসারে পদক্ষেপ নেয়াটা এখন তাদের ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাদের কাছে কলঙ্ক মোচনের কথা হলো অনেকটাই 'কথার-কথা'। তাদের সব বিবেচনার ঊর্ধ্বে হলো 'রাষ্ট্র ক্ষমতার' বিবেচনা। রাষ্ট্র ক্ষমতা চাই-ই-চাই! যে কোনো উপায়ে সেটা চাই-ই। তার পেছনে আদর্শিক কারণ তাদের তেমন একটা নেই। কোন রাজনৈতিক নীতি-আদর্শের কারণে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারাটা তাদের কাছে লোভনীয় হয়ে উঠেছে তেমনটা নয়, বরং এই কারণে যে সরকারে যেতে পারলে পারিষদ দলসহ উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেদারসে লুটপাটের সুযোগ পাওয়া যায়। এভাবে, লুটপাটের অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার প্রণোদনাকেই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ও 'রাজনীতির' ক্ষেত্রে প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত করা হয়েছে। এটিই হলো চলতি হাওয়ার 'রাজনীতির' কলঙ্কিত চেহারার প্রধান উপাদান। প্রাধান্যে চলে আসা 'লুটপাটের' এই লালসা থেকেই উত্সারিত হচ্ছে যাবতীয় অনাচার-দুরাচার। 'বড় দল' বলে দাবিদার দুটি বুর্জোয়া দলই আজ অব্যাহতভাবে অনাচার-দুরাচারকে 'হ্যাঁ' বলে চলেছে।
দুরাচারকে 'হ্যাঁ' বলার পরিস্থিতিতে দু'টি দলই জিম্মি হয়ে পড়েছে। উভয় দলের নেতৃত্বেই এখন লুটপাটকারী ধনাঢ্য শ্রেণির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমতাবস্থায় দল দু'টির নীতি ও পদক্ষেপ যে নিজস্ব গোষ্ঠীগত লুটপাটের সুযোগ বাড়ানোর স্বার্থে পরিচালিত হবে সেটিই স্বাভাবিক। তাছাড়া, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারার সম্ভাবনাটিকে প্রায় সর্বাংশে বিপুল আর্থিক সামর্থ্য ও পেশীশক্তি নিয়ন্ত্রণে রাখার ওপর নির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। অনাচার-দুরাচারকে লালন করা ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে অর্থ ও পেশীশক্তির অধিকারী হওয়ার প্রতিযোগিতায় প্রতিপক্ষকে টেক্কা দেয়ার উপায় নেই। এভাবে, ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতা পরিণত হয়েছে অনাচার-দুরাচার করার প্রতিযোগিতায়।
বড় দুই বুর্জোয়া দলের অনুকরণে তাদের স্বগোত্রীয় জাতীয় পার্টি, জামায়াত ইত্যাদি দলগুলো একই পথ ধরে চলছে। এদের বাইরে কিছু দল আছে যেগুলোর অতীত ঠিক একই রকম না হলেও সেসব দলগুলো আওয়ামী বলয় বা বিএনপি বলয়ে জোটভুক্ত হয়ে কার্যত অনাচার-দুরাচারের প্রক্রিয়াকে মদদ দিয়ে চলেছে। অনাচার-দুরাচারের সঙ্গ দিতে-দিতে তারাও যে সেই রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে তার প্রমাণ সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু ঘটনায় অবলোকন করা গেছে।
দেখা যাচ্ছে যে বিএনপি রাজাকারকে 'না বলতে যেমন নারাজ, তেমনই অনাচার-দুরাচারকেও 'না' বলতে নারাজ। আওয়ামী লীগ রাজাকারকে কিছুটা 'না' বললেও, অনাচার-দুরাচারকে 'না' বলতে তারা সম্মত ও সামর্থ্যবান নয়। সমাজের কিছু মানুষ এই পথকেই সঠিক বলে মনে করে থাকেন। কলঙ্কের উভয় উপাদানকে একই সাথে 'না' বলার পথকে আত্মঘাতী ও নিষ্ফল হবে বলে এ চিন্তার মানুষরা যুক্তি দিয়ে থাকেন। তাদের কথা হলো, রাজাকারদের 'না' বলার কর্তব্য সম্পাদন করতে হলে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়া দরকার। কিন্তু অনাচার-দুরাচারকে 'না' বলতে গেলে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। তাই রাজাকারকে 'না' বলার কাজটি সম্পন্ন করার প্রয়োজনেই অনাচার-দুরাচারকে সাময়িকভাবে মেনে নিতে হবে। এক কলঙ্ককে নির্মূল করার স্বার্থে অপর কলঙ্ককে আপাতত কিছুটা প্রশ্রয় দিতে হবে। এই যুক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেক সময় তারা এমন কথা বলতেও পিছপা হয় না যে, "একজন 'পরহেজগার' রাজাকারের চেয়ে একজন 'দুর্নীতিবাজ' মুক্তিযুদ্ধপন্থি রাজনৈতিকভাবে অধিকতর গ্রহণযোগ্য নয় কি?"
প্রশ্নটি এভাবে উত্থাপন করার প্রচেষ্টাটি শুরুতেই ত্রুটিপূর্ণ। একাত্তরে যারা গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন তারা 'পরহেজগার' হয় কি ভাবে? একইভাবে, অনাচার-দুরাচারে যারা লিপ্ত সেসব 'দুর্নীতিবাজরা' মুক্তিযুদ্ধপন্থি হয় কিভাবে? দ্বিতীয়ত, অনাচার-দুরাচারে লিপ্ত 'দুর্নীতিবাজ' মানুষকে নিয়ে ও তাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় যেয়ে কি রাজাকারকে 'না' বলার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব? দু'টোই তো অন্ধকারের শক্তি। অন্ধকার দিয়ে কি আঁধার দূর করা সম্ভব?
অনেক সময় যুক্তি দেখানো হয় যে, লক্ষ্যই হলো আসল কথা, কি পন্থায় তা অর্জিত হলো সেটি মোটেও কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোনো অসত্ পন্থায় কি সত্ কোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব? ইতিহাস আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয় যে, সত্ ও অসত্ এর মধ্যে দ্বন্দ্বে কোনো মিশ্রণ ঘটানোর চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এক আগুনের সহায়তার আরেক আগুন নিভানোর চেষ্টা কখনই সফল হবার নয়। অনাচার-দুরাচারে লিপ্ত মানুষকে দিয়ে রাজাকারকে 'না' বলার কাজটিও কখনো সফল করা যাবে না। বরঞ্চ, সেই পথ গ্রহণ করলে অনাচার-দুরাচারের বিরুদ্ধে জনগণের ঘৃণাকে কাজে লাগিয়ে রাজাকাররাই আত্মরক্ষার সুযোগ নিবে। ফলে রাজাকার ও দুরাচার— দু'টিই 'হ্যাঁ' হয়ে থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধের পরে পরেই ১৯৭২ সালের একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি। আগাগোড়াই আমি বামপন্থি আদর্শের অনুসারী, ছাত্র ইউনিয়নের একজন সংগঠক। সে সময় ছাত্রলীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে। জাসদ গঠিত হয়েছে। 'বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের' বিপ্লবী রোমান্টিকতায় অনেক তরুণ আকৃষ্ট হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ ছাত্রলীগ—এই দুই সংগঠনের মধ্যে কোনটি সঠিক বিপ্লবী তা নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে প্রকাশ্যে বিতর্ক হতো। এক সময় আমার নেতৃত্বে ছাত্র ইউনিয়ন ও ডাকসু সম্মিলিতভাবে পরীক্ষায় নকল প্রবণতার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সংগ্রাম শুরু করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হয়। পরীক্ষায় নকল করার প্রবণতা কমে আসে। নকলবাজ ছাত্ররা বিপদে পড়ে যায়। সে বিষয়ে মধুর ক্যান্টিনে জাসদ ছাত্রলীগের এক নেতার সাথে আমার একটি প্রকাশ্য বাহাস হয়েছিল। চতুর্দিকে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় আমাদের নকল-বিরোধী আন্দোলনের সমালোচনা করে জাসদ ছাত্রলীগের সেই নেতা বলেছিলেন যে পরীক্ষায় নকলের বিরুদ্ধে আন্দোলন বিপ্লবের জন্য ক্ষতিকর। এটি একটি সংস্কারবাদী কাজ। বিপ্লবীদের দায়িত্ব হলো পরীক্ষায় নকল প্রবণতার বিষয়ে উচ্চবাচ্য না করে 'নকলবাজ সমাজের' বিরুদ্ধে ছাত্রদের নিয়ে বিপ্লবী আন্দোলন করা। জবাবে আমি যুক্তি দিয়েছিলাম যে 'নকলবাজ সমাজের' বিরুদ্ধে বিপ্লবী সংগ্রামের প্রয়োজনেই একই সাথে পরীক্ষায় নকল প্রবণতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা প্রয়োজন। কারণ নকলবাজ ছাত্রকে সাথে নিয়ে নকলবাজ সমাজের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তোলা যায় না। অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী আমার যুক্তিকে সমর্থন করেছিল।
দেশে এখন সেই শক্তির অভ্যুদয় অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে যারা রাজাকার ও অনাচার-দুরাচার—এই উভয় অপশক্তিকে 'না' বলার ইচ্ছা ও সামর্থ্য রাখে। যারা দুটোকেই 'হ্যাঁ' বলে চলছে, অথবা যারা একটিকে 'না' বলতে কিছুটা রাজি থাকলেও অন্যটিকে 'না' বলতে নারাজ, তাদের একটিকে দিয়েও দেশের কলঙ্কমোচন সম্ভব হবে না।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন