এক
কি এমন হলো যে, বিদ্যুৎ এর দাম বাড়াতে হবে? এমন কোন যুক্তি না থাকলেও বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ানোর জন্য তোড়জোড় চলছেÑ গণশুনানীর নামে। অথচ কথা ছিল বিদ্যুতের দাম কমবে।
গড়ে প্রায় প্রতি বছর বিদ্যুৎ দাম বৃদ্ধি যেন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
বিদ্যুৎ এর মূল্যবৃদ্ধি মানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের প্রতি মাসে বিল এর টাকা বাড়বে, তাই নয়। উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে, বাড়ী ভাড়া থেকে শুরু করে ছোট দোকান, ক্ষুদ্র ব্যবসা, সর্বত্র খরচ বাড়বে। সাধারণ মানুষের খরচ বাড়বে । অসাধু বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী, স্বার্থান্বেষী আর কমিশন ভোগীদের পকেট হবে ভারী। এমনিতে বন্যা, হাওড়-এ সংকট, চাল, ময়দাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষের আয় না বাড়লেও এই মূল্য বৃদ্ধির বোঝা তাকেই টানতে হবে।
সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষাকারী বাংলাদেচের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি)সহ বামপন্থি , প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও দেশপ্রেমিক সচেতন ব্যক্তিবর্গ বরাবর অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করে আসছে। এবারও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তি - তর্ক করে দেখান হচ্ছে, অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয় মূল্যবৃদ্ধি শুধু সাধাণ মানুষকেই সংকটে ফেলছে না, অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (বিইআরসি) গঠিত হওয়ার পর সরকার দাম নির্ধারণ এর দায়িত্ব ঐ কমিশনের কাধে দিয়েছে। বেশ ক’বছর ধরে কমিশন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ কোম্পানী গুলোর মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব পান। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে বিইআরসি’র গনশুনানী করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। গনশুনানীর আনুষ্ঠানিকতাও হয়। গণশুনানীতে যুক্তি তুলে ধরে সব পক্ষের ভোক্তারা মূল্যবৃদ্ধির বিপক্ষে থাকলেও শেষে দাম বাড়ে। এর বিরুদ্ধে বরাবর বামপন্থি,প্রগতিশীলরা গণশুনানীতে ও রাজপথে সোচ্চার থাকলেও সরকার হাটে দাম বাড়ানোর পথে। এই দাম বাড়ানোর বিরুদ্ধে রাজধানীতে হরতাল পর্যন্ত করতে হয়েছে। এরপরও আবার দাম বাড়ানোর সব আয়োজন চলছে।
আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ সংকটকে সামনে রেখে এবং ‘বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ব্যার্থ হয়েছে’- এ কথা বলে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা জানায়। জনস্বার্থের চেয়ে ব্যবসায়িক ও দুর্নীতিবাজদের সুবিধা দিতে ‘দায় মুক্তি’ আইন পাশ করে। স্বল্প সময়ের বিদ্যুৎ-এর কথা বলে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল এর নামে বেশী দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো হয়। এর ফলে উৎপাদন ব্যায় অনেকগুণ বেড়ে যায়। গ্যাস উত্তোলন ও এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজকে পেছনে ফেলে দেওয়া হয়। এই ব্যয় বৃদ্ধি জাতীয় অর্থনীতিকে চাপে ফেলে। অর্থনীতিকে চাপে ফেলা আর জন বিক্ষোভের মুখে জানানো হয়, ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যায় কমবে এবং ২০১৪ সাল থেকে বিদ্যুৎ এর দাম কমানো হবে।
ইতিমধ্যে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম অর্ধেকেরও নীচে নেমে এলেও দেশে বিদ্যুৎ এর দাম কমানো হয়নি। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল এ উৎপাদন বন্ধ করা হয় নি, নবায়ন করা হচ্ছে বারবার। রাষ্ট্রায়াত্ত্ব খাতকে বঞ্চিত করে বেসরকারী খাতকে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
দুই.
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে বিদ্যুৎ এর পাইকারী মূল্যবৃদ্ধির আবেদন এ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড যে সব যুক্তি তুলে ধরে , তা হলঃ দুই দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, গত বছরের তুলনায় অধিক তরল জ্বালানী ব্যবহার ও মূল্যবৃদ্ধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সমূহ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারায় উৎপাদন হ্রাস, গ্যাস না পাওযার কতক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বিইআরসি কতৃক ঘোষিত অর্থ না পাওয়া, বিতরণ ইউটিলিটি কর্তৃক বিদ্যুৎ বিল না পাওয়া ইত্যাদি।
এসব কারণে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৮৭ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পথ ধরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুতের বোর্ড, ডিপিডিসিসহ সব কোম্পানী কৃষি সেচ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তার বাতি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। ডিমান্ড চার্জসহ বিভিন্ন চার্জ ও বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির আবেদন এর উপর অনুষ্ঠিতব্য গনশুনানীতে অন্যান্য কোম্পানীও একই ধারায় মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আনবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ভেঙে বিভিন্ন কোম্পানী গঠন করায়, কোন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অহেতুক বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বোর্ড মিটিং এর সিটিং এলাউন্স নিচ্ছেন, সিস্টেম লস এর নামে দুর্নীতি, অপচয় অব্যাহত থাকছে। গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলায় বিদ্যুৎ না থাকলেও পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল ও বিভিন্ন চার্জ পরিশোধে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বিএনপি আমলে ছিল খাম্বা, ছিল না তার, এখন আছে তার, নেই বিদ্যুৎ। যতটুকুতে বিদ্যুৎ আছে ততটুকুতে লোড শেডিং মুক্ত নিরবিচ্ছিন্ন ও ভোল্টেজ আপ -ডাউন মুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। গ্রাহক সেবার উন্নতি নেই।
কি এমন হলো যে, বিদ্যুৎ এর দাম বাড়াতে হবে? এমন কোন যুক্তি না থাকলেও বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ানোর জন্য তোড়জোড় চলছেÑ গণশুনানীর নামে। অথচ কথা ছিল বিদ্যুতের দাম কমবে।
গড়ে প্রায় প্রতি বছর বিদ্যুৎ দাম বৃদ্ধি যেন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
বিদ্যুৎ এর মূল্যবৃদ্ধি মানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের প্রতি মাসে বিল এর টাকা বাড়বে, তাই নয়। উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে, বাড়ী ভাড়া থেকে শুরু করে ছোট দোকান, ক্ষুদ্র ব্যবসা, সর্বত্র খরচ বাড়বে। সাধারণ মানুষের খরচ বাড়বে । অসাধু বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী, স্বার্থান্বেষী আর কমিশন ভোগীদের পকেট হবে ভারী। এমনিতে বন্যা, হাওড়-এ সংকট, চাল, ময়দাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষের আয় না বাড়লেও এই মূল্য বৃদ্ধির বোঝা তাকেই টানতে হবে।
সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষাকারী বাংলাদেচের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি)সহ বামপন্থি , প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও দেশপ্রেমিক সচেতন ব্যক্তিবর্গ বরাবর অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করে আসছে। এবারও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তি - তর্ক করে দেখান হচ্ছে, অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয় মূল্যবৃদ্ধি শুধু সাধাণ মানুষকেই সংকটে ফেলছে না, অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (বিইআরসি) গঠিত হওয়ার পর সরকার দাম নির্ধারণ এর দায়িত্ব ঐ কমিশনের কাধে দিয়েছে। বেশ ক’বছর ধরে কমিশন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ কোম্পানী গুলোর মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব পান। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে বিইআরসি’র গনশুনানী করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। গনশুনানীর আনুষ্ঠানিকতাও হয়। গণশুনানীতে যুক্তি তুলে ধরে সব পক্ষের ভোক্তারা মূল্যবৃদ্ধির বিপক্ষে থাকলেও শেষে দাম বাড়ে। এর বিরুদ্ধে বরাবর বামপন্থি,প্রগতিশীলরা গণশুনানীতে ও রাজপথে সোচ্চার থাকলেও সরকার হাটে দাম বাড়ানোর পথে। এই দাম বাড়ানোর বিরুদ্ধে রাজধানীতে হরতাল পর্যন্ত করতে হয়েছে। এরপরও আবার দাম বাড়ানোর সব আয়োজন চলছে।
আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ সংকটকে সামনে রেখে এবং ‘বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ব্যার্থ হয়েছে’- এ কথা বলে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা জানায়। জনস্বার্থের চেয়ে ব্যবসায়িক ও দুর্নীতিবাজদের সুবিধা দিতে ‘দায় মুক্তি’ আইন পাশ করে। স্বল্প সময়ের বিদ্যুৎ-এর কথা বলে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল এর নামে বেশী দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো হয়। এর ফলে উৎপাদন ব্যায় অনেকগুণ বেড়ে যায়। গ্যাস উত্তোলন ও এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজকে পেছনে ফেলে দেওয়া হয়। এই ব্যয় বৃদ্ধি জাতীয় অর্থনীতিকে চাপে ফেলে। অর্থনীতিকে চাপে ফেলা আর জন বিক্ষোভের মুখে জানানো হয়, ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যায় কমবে এবং ২০১৪ সাল থেকে বিদ্যুৎ এর দাম কমানো হবে।
ইতিমধ্যে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম অর্ধেকেরও নীচে নেমে এলেও দেশে বিদ্যুৎ এর দাম কমানো হয়নি। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল এ উৎপাদন বন্ধ করা হয় নি, নবায়ন করা হচ্ছে বারবার। রাষ্ট্রায়াত্ত্ব খাতকে বঞ্চিত করে বেসরকারী খাতকে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
দুই.
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে বিদ্যুৎ এর পাইকারী মূল্যবৃদ্ধির আবেদন এ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড যে সব যুক্তি তুলে ধরে , তা হলঃ দুই দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, গত বছরের তুলনায় অধিক তরল জ্বালানী ব্যবহার ও মূল্যবৃদ্ধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সমূহ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারায় উৎপাদন হ্রাস, গ্যাস না পাওযার কতক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বিইআরসি কতৃক ঘোষিত অর্থ না পাওয়া, বিতরণ ইউটিলিটি কর্তৃক বিদ্যুৎ বিল না পাওয়া ইত্যাদি।
এসব কারণে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৮৭ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পথ ধরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুতের বোর্ড, ডিপিডিসিসহ সব কোম্পানী কৃষি সেচ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তার বাতি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। ডিমান্ড চার্জসহ বিভিন্ন চার্জ ও বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির আবেদন এর উপর অনুষ্ঠিতব্য গনশুনানীতে অন্যান্য কোম্পানীও একই ধারায় মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আনবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ভেঙে বিভিন্ন কোম্পানী গঠন করায়, কোন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অহেতুক বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বোর্ড মিটিং এর সিটিং এলাউন্স নিচ্ছেন, সিস্টেম লস এর নামে দুর্নীতি, অপচয় অব্যাহত থাকছে। গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলায় বিদ্যুৎ না থাকলেও পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল ও বিভিন্ন চার্জ পরিশোধে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বিএনপি আমলে ছিল খাম্বা, ছিল না তার, এখন আছে তার, নেই বিদ্যুৎ। যতটুকুতে বিদ্যুৎ আছে ততটুকুতে লোড শেডিং মুক্ত নিরবিচ্ছিন্ন ও ভোল্টেজ আপ -ডাউন মুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। গ্রাহক সেবার উন্নতি নেই।
তিন.
২০১৫ ইং গণশুনানীতে সিপিবি-বাসদ এর পক্ষ থেকে দাম কমানোর জন্য গণশুনানীর আয়োজনের আবেদন করা হয়েছিল। এবারও ক্যাব এর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট জ্বালানী বিশেষজ্ঞ ড. এস শামসুল আলম দাম কমানোর জন্য গণশুনানীর আবেদন করেন। বামপন্থিরা ঐ আবেদন সমর্থন করে গণশুনানীর দাবি করেন। ঐ আবেদন এ যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমান অবস্থায়ও কম মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এটা করা হয় নি কেন ? তাই বেশী দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের দায় জনগন নেবে না । তথ্যে দেখান হয়, কম খরচে উৎপাদন করলে ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যায় এখানকার থেকে ১ টাকা ২৬ পয়সা কম হতো ।তাই উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে বিদ্যুৎ এর দাম কমানোর আবেদন করা হয়।
ঐ আবেদন এ বলা হয়, পাইকারী বিদ্যুৎ এর দাম ৭২ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ আমরা (ক) বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল বাবদ ২৬ পয়সা, (খ) ভর্তুকির সুদ বাবদ ২১ পয়সা, (গ) গ) ফার্নেস ওয়েল এর পরিবর্তে মেঘনাঘাটে আইপিপিতে ডিজেল ব্যবহারে ঘাটতি ১৪ পয়সা, (ঘ) পাইকারী বিদ্যুতের বর্তমান দাম হারে ঘাটতি ৫ পয়সা। অন্যদিকে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া (ঙ) ১৩২ কেভি লেভেলে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিক্রিতে উদ্ধৃত্ত আয় ৮ পয়সা এবং (চ) পাওয়ার ফ্যাক্টরে জরিমানা বাবদ আয় ৪ পয়সা দিচ্ছি। সর্বমোট এই ৭৮ পয়সা প্রস্তাবিত দাম বৃদ্ধিতে সমন্বয় করলেও ৭২ পয়সা বাড়ানো নয় বরং ৬ পয়সা কমানো যায়।
গণশুনানীতে জ্বালান বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল আলম এর এসব প্রশ্নের জেরার উত্তরে দু’একটি ক্ষেত্রে পয়সার হেরফের ছাড়া কোন যুক্তিকে নাকচ করতে পারেনি, দাম বাড়ানোর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিইআরসি’র টেকনিক্যাল কমিটি।
এছাড়া আবেদন এ স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে যে, শুধুমাত্র আমাদের কথা নয়, বিইআরসি’র আদেশ প্রতিপালিত হলে (ক) গ্যাসে মেঘনাঘাট আইপিপিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে সাশ্রয় হতো ১৩৩২.৯৭ কোটি টাকা। (খ) রেন্টাল-কুইক রেন্টালে গ্যাস না দিয়ে ঐ গ্যাস দিয়ে সরকারি খাতের প্লান্ট এ বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সাশ্রয় হতো ১৩০১.৩২ কোটি টাকা। (গ) তেল ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুত তৈরীতে জ্বালানীর দাম সমন্বয় করলে সাশ্রয় হতো ২১১১.৯১ কোটি টাকা। (ঘ) তেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমালে সরকারী ও বেসরকারীখাতে সাশ্রয় হতো ৭৪০.৭৯ কোটি টাকা। (ঙ) রেন্টাল-কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট যৌক্তিক করতে পারলে সাশ্রয় হতো ৮৫৫.৮০ কোটি টাকা। এই হিসেবে ২০১৫-১৬ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যায় কমানো যেত ৬৩৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ উৎপাদন ব্যায় কমতো ইউনিটে ১ টাকা ২৬ পয়সা।
চার.
এসব তথ্য উপাত্তকে উড়িয়ে সম্ভব হয়নি বিইআরসি’র। অন্যদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিপিবি বাসদ-গণতান্ত্রিক বাম মোর্চাসহ বিভিন্ন সংগঠন রাজপথে থেকে ‘দাম বাড়াতে নয়, কমাতে গণ শুনানীর’ ও দাম কমানোর দাবীতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর গণশুনানীর মধ্যেই ঠিক হয় ‘দাম কমানোর আবেদন এর উপর গন শুনানী হবে ৫ অক্টোবর’। অব্যাহত আন্দোলনের চাপেই দেশে এই প্রথমবারের মত ‘দাম কমানোর আবেদন’ এর প্রেক্ষিতে গন শুনানীর সিদ্ধান্ত নিলেন বিইআরসি।
বিইআরসি'র অভিনন্দন পাওয়ার মত পদক্খেপ এটি ।
যদিও আমরা জানি, অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, বিইআরসি নিরপেক্ষ জনস্বার্থের সংস্থা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। বরং মানুষের ধারণা শেষ বিচারে এই প্রতিষ্ঠান সরকারেরই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। এবার তাই বিইআরসি আরেক পরীক্খার মুখে পড়ছে ।
তারপরও এটি আন্দোলনের একটি উল্লেখযোগ্য ফল। ৫ অক্টোবর দাম কমানোর গণশুনানীতে বিস্তারিতভাবে যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ হবে,দেশবাসীকে জানানোর সুযোগ পাওয়া যাবে ।প্রচার মাধ্যম অতীতের মত এ বিষয়ে জনস্বার্থ ভূমিকা রাখবে বলেই প্রত্যাশা সবার । একই সাথে দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রেখে সাধারণ মানুষকে সমবেত করতে পারলে আরেক ধাপ এগুনো যাবে। বিজয় অর্জন করা যাবে।
বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি আর সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য দায়িত্বশীল নাগরিকের ভূমিকা পালন করতে হবে তেমনই অন্যায়, অযৌক্তিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে ।
লেখক: রুহিন হোসেন প্রিন্স, সম্পাদক, সিপিবি, কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্যতম সংগঠক জাতীয় কমিটি
২০১৫ ইং গণশুনানীতে সিপিবি-বাসদ এর পক্ষ থেকে দাম কমানোর জন্য গণশুনানীর আয়োজনের আবেদন করা হয়েছিল। এবারও ক্যাব এর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট জ্বালানী বিশেষজ্ঞ ড. এস শামসুল আলম দাম কমানোর জন্য গণশুনানীর আবেদন করেন। বামপন্থিরা ঐ আবেদন সমর্থন করে গণশুনানীর দাবি করেন। ঐ আবেদন এ যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমান অবস্থায়ও কম মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এটা করা হয় নি কেন ? তাই বেশী দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের দায় জনগন নেবে না । তথ্যে দেখান হয়, কম খরচে উৎপাদন করলে ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যায় এখানকার থেকে ১ টাকা ২৬ পয়সা কম হতো ।তাই উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে বিদ্যুৎ এর দাম কমানোর আবেদন করা হয়।
ঐ আবেদন এ বলা হয়, পাইকারী বিদ্যুৎ এর দাম ৭২ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ আমরা (ক) বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল বাবদ ২৬ পয়সা, (খ) ভর্তুকির সুদ বাবদ ২১ পয়সা, (গ) গ) ফার্নেস ওয়েল এর পরিবর্তে মেঘনাঘাটে আইপিপিতে ডিজেল ব্যবহারে ঘাটতি ১৪ পয়সা, (ঘ) পাইকারী বিদ্যুতের বর্তমান দাম হারে ঘাটতি ৫ পয়সা। অন্যদিকে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া (ঙ) ১৩২ কেভি লেভেলে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিক্রিতে উদ্ধৃত্ত আয় ৮ পয়সা এবং (চ) পাওয়ার ফ্যাক্টরে জরিমানা বাবদ আয় ৪ পয়সা দিচ্ছি। সর্বমোট এই ৭৮ পয়সা প্রস্তাবিত দাম বৃদ্ধিতে সমন্বয় করলেও ৭২ পয়সা বাড়ানো নয় বরং ৬ পয়সা কমানো যায়।
গণশুনানীতে জ্বালান বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল আলম এর এসব প্রশ্নের জেরার উত্তরে দু’একটি ক্ষেত্রে পয়সার হেরফের ছাড়া কোন যুক্তিকে নাকচ করতে পারেনি, দাম বাড়ানোর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিইআরসি’র টেকনিক্যাল কমিটি।
এছাড়া আবেদন এ স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে যে, শুধুমাত্র আমাদের কথা নয়, বিইআরসি’র আদেশ প্রতিপালিত হলে (ক) গ্যাসে মেঘনাঘাট আইপিপিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে সাশ্রয় হতো ১৩৩২.৯৭ কোটি টাকা। (খ) রেন্টাল-কুইক রেন্টালে গ্যাস না দিয়ে ঐ গ্যাস দিয়ে সরকারি খাতের প্লান্ট এ বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সাশ্রয় হতো ১৩০১.৩২ কোটি টাকা। (গ) তেল ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুত তৈরীতে জ্বালানীর দাম সমন্বয় করলে সাশ্রয় হতো ২১১১.৯১ কোটি টাকা। (ঘ) তেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমালে সরকারী ও বেসরকারীখাতে সাশ্রয় হতো ৭৪০.৭৯ কোটি টাকা। (ঙ) রেন্টাল-কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট যৌক্তিক করতে পারলে সাশ্রয় হতো ৮৫৫.৮০ কোটি টাকা। এই হিসেবে ২০১৫-১৬ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যায় কমানো যেত ৬৩৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ উৎপাদন ব্যায় কমতো ইউনিটে ১ টাকা ২৬ পয়সা।
চার.
এসব তথ্য উপাত্তকে উড়িয়ে সম্ভব হয়নি বিইআরসি’র। অন্যদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিপিবি বাসদ-গণতান্ত্রিক বাম মোর্চাসহ বিভিন্ন সংগঠন রাজপথে থেকে ‘দাম বাড়াতে নয়, কমাতে গণ শুনানীর’ ও দাম কমানোর দাবীতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর গণশুনানীর মধ্যেই ঠিক হয় ‘দাম কমানোর আবেদন এর উপর গন শুনানী হবে ৫ অক্টোবর’। অব্যাহত আন্দোলনের চাপেই দেশে এই প্রথমবারের মত ‘দাম কমানোর আবেদন’ এর প্রেক্ষিতে গন শুনানীর সিদ্ধান্ত নিলেন বিইআরসি।
বিইআরসি'র অভিনন্দন পাওয়ার মত পদক্খেপ এটি ।
যদিও আমরা জানি, অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, বিইআরসি নিরপেক্ষ জনস্বার্থের সংস্থা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। বরং মানুষের ধারণা শেষ বিচারে এই প্রতিষ্ঠান সরকারেরই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। এবার তাই বিইআরসি আরেক পরীক্খার মুখে পড়ছে ।
তারপরও এটি আন্দোলনের একটি উল্লেখযোগ্য ফল। ৫ অক্টোবর দাম কমানোর গণশুনানীতে বিস্তারিতভাবে যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ হবে,দেশবাসীকে জানানোর সুযোগ পাওয়া যাবে ।প্রচার মাধ্যম অতীতের মত এ বিষয়ে জনস্বার্থ ভূমিকা রাখবে বলেই প্রত্যাশা সবার । একই সাথে দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রেখে সাধারণ মানুষকে সমবেত করতে পারলে আরেক ধাপ এগুনো যাবে। বিজয় অর্জন করা যাবে।
বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি আর সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য দায়িত্বশীল নাগরিকের ভূমিকা পালন করতে হবে তেমনই অন্যায়, অযৌক্তিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে ।
লেখক: রুহিন হোসেন প্রিন্স, সম্পাদক, সিপিবি, কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্যতম সংগঠক জাতীয় কমিটি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন